জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা হওয়ার প্রতিবাদে দেশি-বিদেশি যারা সোচ্চার, তাদের উদ্দেশে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান প্রশ্ন রেখেছেন, যারা এখন এত উৎসাহ দেখাচ্ছেন, একই উৎসাহ লতিফ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে দেখালেন না কেন? তিনিও তো একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেই বক্তব্য নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে। কিন্তু তখন তাকে যেভাবে অপদস্থ করা হয়েছিল, সেটা নিয়ে আপনারা প্রশ্ন তুললেন না কেন? হজ, মহানবী (সা.), তাবলিগ জামায়াত ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সারা দেশে কয়েক ডজন মামলা হয়, কারাবাসও করতে হয়েছে তাকে। ওই মন্তব্যের কারণে মন্ত্রিত্ব হারানোর পাশাপাশি দল থেকেও বহিষ্কৃত হন তিনি। সবশেষে সংসদ সদস্যের পদ ত্যাগ করার পর এখন রাজনীতির সাথে কেনো সম্পর্ক নেই লতিফের।মাহফুজ আনামের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মিজানুর রহমান আরো বলেন, কথা বলার স্বাধীনতা ব্যাহত করার জন্য কেউ যদি মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা করে থাকেন, তার নিন্দা জানাই। তিনি পত্রিকার সম্পাদক, উনি ক্ষমা চেয়েছেন। এটা উনার মহত্ব। কিন্তু বিকৃত তথ্যের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হয়েছেন তাদের প্রতিকার কী? এই বিষয়টা আইনের উপরই ছেড়ে দেয়া উচিৎ। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান। চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। এরপরই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি যারা সোচ্চার তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমি আশ্চর্য হয়ে যাই, একজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের নিয়ে যখন কোনো বিদেশি সংস্থাও সরকারকে মামলা তুলে নিতে বলে। কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তি মামলা করলে সেগুলো প্রত্যাহার করে নেয়ার ক্ষমতা কী রাষ্ট্র কিংবা সরকারের আছে? তাদের কথা শুনলে মনে হবে রাষ্ট্র কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে মামলাটি করিয়েছে। তাদের এমন ধারণা তো অমূলক।’মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাষ্ট্র কিন্তু কোনো মামলা দায়ের করেনি। ব্যক্তি উদ্যোগে অতি উৎসাহী হয়ে কেউ কেউ মামলা করছে। ব্যক্তিরা যখন মামলা করে সেখানে তো রাষ্ট্র কিংবা সরকারের কোনো হাত থাকে না। আইনগত প্রতিকার চাওয়া তো ব্যক্তির অধিকার।ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. ইরশাদ কামাল খান। এতে বক্তব্য রাখেন- নেপালের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ড. যুবরাজ সাংগ্রুলা, আইন অনুষদের সমন্বয়ক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এম নূরুজ্জামান, ব্যবসায় অনুষদের প্রধান অধ্যাপক ড. এম আইয়ূব ইসলাম, লিবারেল আর্টস অনুষদের ডিন অধ্যাপক কাজী মোস্তাইন বিল্লাহ।জীবন মুছা/এনএফ/আরআইপি