ফেনীর পরশুরামে আহত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ এম রকিব হায়দারকে মারধরের ঘটনায় ৩ জনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। আটকৃরা হলেন- পরশুরাম পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাবেক যুবলীগ সভাপতি ও বর্তমান শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, স্থানীয় যুবলীগ নেতা পারভেজ এবং রাশেদুল হাসান রাশু। এছাড়া এ ঘটনায় আহত ইউএনওকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এ সময় তিনি তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন।পরশুরামের নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম রকিব হায়দারকে শুক্রবার সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা পিটিয়ে আহত করেছে। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে ফেনীর জেলা প্রশাসক আমিনুল আহসান ইউএনও হায়দারকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে পরশুরামে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের আগমন উপলক্ষে বিভিন্ন দফতরের লোকজন মন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। একই স্থানে অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে রকিব হায়দারও উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে চিথলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের বড় ভাই আওয়ামী লীগ নেতা মো. ফারুক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার মজুমদার তফনের সঙ্গে পরিচয় করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্যমনস্ক থাকায় নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। এনিয়ে তফনের সঙ্গে ইউএনও’র সঙ্গে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মাথায় ঘুষি মারলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাটিতে পড়ে যায়। পড়ে যাওয়ার পরও ফারুকের নেতৃত্বে আরো ৬/৭ জন ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেধড়ক মারধর করে।জানা গেছে, গত ২৫ এপ্রিল নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিব হায়দার পরশুরামে যোগদান করলে ওইদিন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে বরণ করে নেন। নতুন ইউএনও হিসাবে যোগদান করার পর থেকে ইউএনও এর সঙ্গে এডিপি, বিশেষ বরাদ্দ, টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন বিষয় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মত বিরোধ দেখা দেয়। পরশুরাম থানার ওসি আবুল কাশেম চৌধুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মারধরের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার হাবিবুল করিম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার মজুমদার তফন জানান, আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মারধর করেনি। কে বা কারা তার উপর হামলা করেছে সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খায়রুল বাশার মজুমদারের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তফন হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তার সঙ্গে কোন ঘটনা ঘটেনি।জহিরুল হক মিলু/জেএইচ