দুই টাকার লোভে কোটি টাকার ক্ষতি
ডলার বিনিময় হারে মাত্র দুই টাকা ভাড়ার ব্যবধানের কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন হজযাত্রীরা। ফলে যাত্রীর অভাবে ১৫ ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ। এতে কোটি টাকার লোকসান গুনতে হয় বিমানকে। ধর্ম মন্ত্রণালয় বা ও হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ভাড়ার দুই টাকার তারতম্যের কারণে শত শত হজযাত্রী সৌদি এয়ারলাইন্সে টিকিট কাটেন। যাত্রী সংকটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একে একে বাতিল হয় ১৫ ফ্লাইট। ফ্লাইট না থাকায় হাজারও হজযাত্রীর যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
তবে এ অবস্থা থেকে উত্তরণে শক্ত হাতে হাল ধরেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। মন্ত্রীপাড়ার বাসা থেকে ছুটে যান আশকোনা হজ ক্যাম্পে। সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন এয়ারলাইন্সে ফ্লাইট ক্যাপাসিটি ৩০০ থেকে ৪১৯ জন এবং নতুন করে ১৫ ফ্লাইট নিয়ে হজযাত্রী পরিবহন সমস্যার সমাধান করেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯৬ হাজার ৫৫৮ জনসহ মোট ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জন হজে যাওয়ার কথা রয়েছে। হজ ও ওমরাহ নীতি ২০১৬ অনুসারে মোট হজযাত্রীর শতকরা ৫০ ভাগ রাষ্ট্রীয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বাকি ৫০ ভাগ সৌদি এয়ারলাইন্স পরিবহন করা কথা।
হাব সভাপতি ইব্রাহিম বাহার জাগো নিউজকে জানান, বাংলাদেশ বিমান প্রতি ডলারের মূল্যে ৮০ টাকা ৫০ পয়সা ও সৌদি এয়ারলাইন্স ৭৮ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে। এছাড়া বাংলাদেশ বিমানে সিটি চেক ইন বাবদ অতিরিক্ত ৫০ ডলার নিলেও সৌদি এয়ারলাইন্স তা না নেয়ার ঘোষণা দেয়। আড়াই ডলারের পার্থক্যে ও সিটি চেক ইনের টাকা সাশ্রয় করতে বাংলাদেশি হজ যাত্রীরা দলে দলে সৌদি এয়ারলাইন্সে টিকিট সংগ্রহ শুরু করে।
এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আগেই আলোচনা করে গত ৪ আগস্ট থেকে যাত্রী পরিবহনের ফ্লাইট নিয়ে যাত্রী পরিবহন শুরু করে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে নির্ধারিত ফ্লাইটে যাত্রী না পাওয়ায় একে একে বাতিল হয় ১৫ ফ্লাইট। পরবর্তীতে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর ও ধর্ম সচিব আবদুল জলিলের হস্তক্ষেপে ডলার বিনিময় হার সৌদি এয়ারলাইন্সের সমপরিমাণ অর্থাৎ ৭৮ টাকা ৫০ পয়সা করে দেয়ার পর বিমানের টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
এ প্রসঙ্গে ধর্ম মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিমানের ভাড়া সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ১৫ ফ্লাইট বাতিল হয়। শুরুর দিকে হজযাত্রী ও এজেন্সিগুলো বিমানের পরিবর্তে সৌদি এয়ারলাইন্সের দিকে ঝুঁকে পড়ে। এছাড়া চলতি বছর সৌদি সরকার কর্তৃক ই-হজ ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি কার্যকর করা, প্রতি ফ্লাইটে তিন মোয়াল্লেমের হজযাত্রী প্রেরণের বাধ্যবাধকতা, ভিসা সংক্রান্ত কিছু জটিলতা এবং হজ এজেন্সিগুলোর মক্কা মদিনার বাড়ি ভাড়া শিডিউলের কারণে ফ্লাইটগুলো বাতিল করতে হয় বলে জানান তিনি।
এমইউ/এএইচ/এবিএস