খেলাধুলা

সাবেকদের চিন্তা-ভাবনাগুলোর বাস্তব প্রয়োগ ঘটাতে চান ফারুক

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ হঠাৎ কেন ও কি কারণে আজ সোমবার সকাল ও দুপুরের মধ্যবর্তী সময়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কদের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন? সেখানে কি নিয়ে আলাপ হয়েছে? বিসিবি প্রধানই শুধু কথা বলেছেন, নাকি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়করা নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেছেন?

Advertisement

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বিকেলে গড়াতেই তা জানিয়ে দিয়েছেন। সন্তুষ্টি নিয়ে সুমন বলেন, ‘বিসিবি সভাপতি ফারুক ভাই (ফারুক আহমেদ) আজ আমাদের সাবেক অধিনায়কদের সাথে কথা বলেছেন। ওই অনানুষ্ঠানিক আলাপ আলোচনায় আমরা সন্তুষ্ট। আর সেখানে শুধু বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ নন, আলোচক ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়করা।’ সুমন যোগ করেন, ‘ফারুক ভাই আমাদের কথা মন দিয়ে শুনেছেন এবং আমার মনে হয়, একটা ভাল আলোচনা হয়েছে। সেখানে দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কদের সুচিন্তিত মতামত উঠে এসেছে।’

হাবিবুল বাশার সুমনের কন্ঠে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেছেন অপর দুই সাবেক অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও মোহাম্মদ আশরাফুল। নান্নু বলেন, ‘খুবই ভাল আলোচনা হয়েছে। জাতীয় দলের অনেক সাবেক অধিনায়ক নিজেদের মনের কথাগুলো খুলে বলেছেন।’

জাতীয় লিগকে একটানা আয়োজন না করে ২ ভাগে করা যায় কিনা- সে প্রস্তাব দিয়ে নান্নু বলেন, ‘আমি বলেছি একটানা ৭ রাউন্ড খেলা না চালিয়ে বছরের ২ সময়ে ৪ ও ৩ রাউন্ড করে ২ ভাগে জাতীয় লিগ বা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট আয়োজন করলে ভাল হবে। তাতে করে কোন না কোন পর্বে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও অংশ নিতে পারবেন।’ আশরাফুল বলেন, ‘আমাদের কথাগুলো ফারুক ভাই শুনেছেন। আমি ২টি পয়েন্ট বলেছি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে মৌসুম শুরুর প্রস্তাব করেছি। এছাড়া বিপিএলে যে সব ক্রিকেটার সুযোগ পায় না, তাদের দিয়ে অন্তত ৪টি দল করে হলেও আরও একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট চালুর প্রস্তাবও করেছি।’

Advertisement

আশরাফুলের অনুভব, মুমিনুল হকের মত সাবেক টেস্ট ক্যাপ্টেন ও দেশের ক্রিকেটের অন্যতম নামী তারকা বিপিএলে দল পায় না। তার মত আরও ডজন খানেক ক্রিকেটার আছে। তাদের জন্য আরও একটি টি-টোয়েন্টি আসর আয়োজন করা যেতে পরে।

এখন প্রশ্ন হলো গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমন, খালেদ মাসুদ পাইলট (অনলাইনে), রাজিন সালেহ, শাহরিয়ার নাফীস, লিটন দাস ও মুমিনুল হকরা যে সব আলোচনা করেছেন- তা কি শুধুই আলোচনার টেবিলে সীমাবদ্ধ থাকবে?

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ এ আলোচনাটাকে কিভাবে নিচ্ছেন? দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে সাবেক অধিনায়কদের সম্মিলিত মতামতকে তিনি কতটা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন? এসব মতামত কি বাস্তবরূপ পাবে? না কথাবার্তাগুলো আলোচনার টেবিলেই থেকে যাবে?

এসব নিয়ে আজ সোমবার পড়ন্ত বিকেলে জাগো নিউজের সাথে আলাপে বিসিবি বিগ বস ফারুক আহমেদ বলেন, ‘দারুন আলোচনা হয়েছে আমাদের মাঝে। আমি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কদের সাথে বসে দেশের ক্রিকেট নিয়ে তাদের ভাবনাগুলো জানতে আগ্রহী ছিলাম। তাই তাদের সাথে বসে তাদের কথা শোনার আগ্রহ থেকে সবার সাথে বসা। আমি হ্যাপি। অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। ম্যাক্সিমাম ফরমার ক্যাপ্টেনই উপস্থিত ছিলেন। আমি জানি, তারা সবাই বিভিন্ন সময় দেশের ক্রিকেটের জন্য মাঠ ও মাঠের বাইরে না হয় বোর্ডে থেকে কাজ করেছেন। অনেকে এখনো কাজ করছেন।’

Advertisement

‘কাজেই কোথায় কোন সমস্যা আছে, আমাদের ঘাটতি ও কমতি বা দূর্বলতার জায়গাগুলো তাদের খুব ভাল জানা। আমি খুবই সন্তুষ্ট যে, সব ফরমার ক্যাপ্টেন যারা এসেছিলেন, সবাই যার যার চিন্তা-ভাবনা শেয়ার করেছেন। আমি খুব ভালমত তা শুনেছি। সব লিখা আছে। আমরা আগামীতে সে সব মতামত গুরুত্বের সাথে নিয়ে বাস্তব প্রয়োগের সাধ্যমত চেষ্টা করবো।’

সবার চিন্তা ভাবনার আলোকে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়েও অনেক খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। অনেকেই কিভাবে এ আসরগুলোর মান উন্নত করা যায়, তা নিয়ে কথা বলেছেন। অনেক প্রস্তাব এসেছে। যার প্রায় সবকটাই যুক্তিযুক্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস এ প্রস্তাবগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন ঘটলে দেশের ক্রিকেট এগিয়ে যাবে অনেকদূর।’ ফারুক ঘরোয়া ক্রিকেটের বিভিন্ন আসর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিপিএলকে সামনে টেনে আনেন। বলেন, ‘বিপিএল আসলে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এক আসর। বিপিএল নিয়ে গোটা দেশের ১৮ কোটি মানুষের ব্যাপক আগ্রহ। আমরা সবাই একমত, আসলে বিপিএল সবাই দেখতে আগ্রহী।’

এখন বিপিএলের কাঠামোগত এবং আয়োজনগত উন্নতি দরকার। বিপিএলকে ঘষে-মেজে এক ভাল, আকর্ষণীয়, জমজমাট ও প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ আসর হিসেবে গড়ে তোলার প্রাণপন চেষ্টা করবো আমরা। যদি তা পারি তাহলে বিপিএল বিশ্বের সেরা তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি আসরের মধ্যে একটি হবে।’

এআরবি/আইএইচএস