চলছে পবিত্র মাহে রমজান, আর সামনে আছে ঈদ। প্রতিবছর এই সময় ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তের পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে হাজার হাজার বাংলাদেশি পর্যটক পশ্চিমবঙ্গে আসেন। কিন্তু সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের জেরে এবার বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়।
বাংলাদেশি পর্যটকের অভাবে কলকাতার নিউমার্কেটের ব্যবসায় ধস নামার পর এবার পেট্রাপোল সীমান্তকেন্দ্রিক অঞ্চলের ব্যবসায়ও মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। পেট্রাপোল স্থলবন্দর অঞ্চলে ফলের ব্যবসা থেকে শুরু করে যানবাহন, হোটেল, মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলো বাংলাদেশি পর্যটকের অভাবে ধুঁকছে।
বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমেছেঅভিবাসন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দৈনিক গড়ে ৫০০ থেকে এক হাজার মানুষ পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে যাতায়াত করছেন। অথচ আগের বছর পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল দৈনিক সাত থেকে আট হাজার।
আরও পড়ুন>>
পেট্রাপোল স্থলবন্দরের অর্থনীতির বড় অংশই বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল। রমজান মাসে সাধারণত ব্যবসায়ীদের আয় বাড়ে। কারণ বাংলাদেশি পর্যটকরা এখান থেকে ফল কিনে ইফতার সারেন। কিন্তু এবার ক্রেতার ভিড় নেই।
ফলের দোকানের পাশাপাশি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলোতেও বাংলাদেশি পর্যটকের দেখা মিলছে না। খাবারের হোটেল থেকে শুরু করে থাকার হোটেলগুলো ফাঁকা। সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো যাত্রীশূন্য দাঁড়িয়ে থাকছে।
ব্যবসায়ীদের হতাশাফল ব্যবসায়ী সমিরন মণ্ডল জাগো নিউজকে জানান, প্রতিবছর রমজানে আমাদের এখানে ফলের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। কারণ বাংলাদেশি পর্যটকরা এখান থেকেই ফল কিনে ইফতার করেন। এবার বাংলাদেশি পর্যটক না থাকায় আমাদের ব্যবসায় বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। আশা করছি, সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে।
মুদ্রা বিনিময় ব্যবসায়ী হায়দার আলী বলেন, প্রতিবছর রমজান মাসে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা বেশি থাকে। কিন্তু এবার সংখ্যাটা খুবই কম। যদি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মঙ্গল বিশ্বাস জানান, বাংলাদেশি পর্যটক প্রায় নেই বললেই চলে। স্থানীয় যাত্রী নিয়েই আমাদের চলতে হচ্ছে। জানি না এইভাবে আর কতদিন চলবে।
পেট্রাপোল বন্দরকেন্দ্রিক অর্থনীতির ওপর কয়েক লাখ মানুষ নির্ভরশীল। তারা চান, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত স্বাভাবিক হোক, যাতে ব্যবসার অবস্থাও আগের মতো ফিরে আসে।
ডিডি/কেএএ