‘কুমিল্লার বিএনপির রাজনীতি আওয়ামী লীগের টাকায় চলে’—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার দেবিদ্বারে বিএনপি ও ছাত্র-জনতা পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
এই কর্মসূচি ঘিরে উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করে দিনব্যাপী। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকে উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় ও ৪টায় উভয়পক্ষ উপজেলা সদরে পৃথকভাবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
হাসনাত আবদুল্লাহকে হুমকি ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে জুলাই অভ্যুত্থানের আহত, শহীদ পরিবার ও ছাত্র-জনতার উদ্যোগে দেবিদ্বার জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে উপজেলা পরিষদ হয়ে মুক্তিযুদ্ধা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন জাতীয় যুবশক্তি কেন্দ্রীয় সংগঠক নাজমুল হাসান নাহিদ, এনসিপির উপজেলা নেতা শামীম কাউসার, জালাল আহমেদ, আসিফ হোসেন ফয়সাল, ছাত্র সংসদ নেতা রকিবুল হাসান হৃদয়, ছাত্র আন্দোলনে আহত তুষার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিয়াম ইসলাম, ইয়াছিন আরাফাত, তানভীর আহম্মেদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন:
ক্ষমা চাইতে হাসনাত আব্দুল্লাহকে এক সপ্তাহের আলটিমেটামঅন্যদিকে, ‘কুমিল্লায় বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায়’—হাসনাত আব্দুল্লাহর এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে একই দিন বিকেল ৪টায় দেবিদ্বারের সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জরুল আহসান মুন্সীর বাসভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। মিছিলটি উপজেলা পরিষদ হয়ে মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে এসে শেষ হয়।
এসময় আগামী সাত দিনের মধ্যে হাসনাত আব্দুল্লাহকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যরিস্টার রেজবিউল আহসান মুন্সী।
হাসনাত আব্দুল্লাহকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনার এই বক্তব্য বিএনপিকে অপমান করেছে। শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শকে আপমান করেছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে অপমান করেছে, জুলাই আন্দোলনে শহীদ বিএনপির নেতাকর্মীদের অপমান করেছে। তাই আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার রেজবিউল আহসান মুন্সীর সহধর্মিণী ফারজানা বুবলী, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি সুফিয়া বেগম, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অধ্যাপক সুলতান কবির, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (প্রস্তাবিত) আবুল কালাম আজাদ, বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম, সাহাজ উদ্দিন সাজু, এনামুল হক, রবিউল আউয়াল সাইফুল প্রমুখ।
এরআগে গত ১৬ মে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে জুলাই সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা ভুলে গেলে চলবে না আমরা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পেরেছি। কিন্তু তাদের যারা ডোনার, যে অর্থ ব্যবস্থা, সেটি এখনো ঠিক-ঠাক। আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখনো তাদের টাকায় চলে। বিএনপির রাজনীতিও এখন আওয়ামী লীগের টাকায় চলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে (সমাবেশে) বিএনপির আপনারা যারা রয়েছেন আমাদের শত্রু ভাইবেন না। এটা আমি আপনাদের ভালোর জন্যই বলছি। কুমিল্লার অনেক উপজেলা রয়েছে, যেখানে সব দলের রাজনীতি এখন আওয়ামী লীগের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত আওয়ামী লীগের অর্থনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করে দেওয়া। আওয়ামী লীগের সব অর্থ বাজেয়াপ্ত করা।’
জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/এমএস