দেশজুড়ে

ফাঁকিবাজ সাকিবকে প্রাধান্য দিতো না বন্ধুরা

বিশ্বসেরা ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান শৈশব থেকেই খেলাধুলার প্রতি ছিলেন বেশ মনোযোগী। পড়াশোনার চেয়ে খেলাধুলাই বেশি করতেন তিনি। স্কুলের টিফিন পালিয়ে কখনও বা স্কুলে না এসে খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতেন সাকিব। বেশি বেশি খেলাধুলার জন্য তার সহপাঠীদের মধ্যে মেধাবীরা বেশি প্রাধান্য দিতো না সাকিবকে। কিন্তু সাকিব সেদিকে নজর না দিয়ে নিজের কাজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন।ফয়সাল কই? ফয়সাল কই? এভাবেই চিৎকার করে স্কুলের শিক্ষক সিরাজ স্যার প্রাইভেট পড়ানোর সময় ডাক নামে সাকিবকে খুঁজে ফিরতেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে দেখা যেত ফয়সাল, স্যারের বাসার পেছনের আম বাগানে ক্রিকেট খেলছে মহাআনন্দে। তাকে ধরে নিয়ে এসে পড়াতে বসাতেন স্যার। কখনও কখনও আবার আসতো না স্যারের কাছে। সিরাজ স্যার যখন তাকে জিজ্ঞেস করতেন? তুমি পড়তে না এসে খেলাধুলা করছো কেন? উত্তরে সাকিব আল হাসান বলতো, পড়ার কথা ভুলে গেছি। এজন্য অনেক বকাঝকাও হজম করতে হয়েছে সাকিবকে।এভাবেই আবেগাপ্লুত হয়ে শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত আনন্দঘণ মুহূর্তের কথাগুলো বর্ণনা করেন আমেরিকায় বসবাসরত সাকিবের বন্ধু আবদুল্লাহ ইমরান হিরক।সাকিব আল হাসানের অপর এক আত্মীয় বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলার সিনিয়র সহকারী জজ নাসির উদ্দিনের স্ত্রী ডেইজী ইয়াসমীন জাগো নিউজকে জানান, সাকিব খেলাধুলাকে ভালোবেসে সারা জীবনটাকেই উৎসর্গ করেছেন। মাঝে মধ্যে সাকিব মাগুরায় আসলে তাদের বাসায় যাওয়া আসা হয়। কিন্তু যতটুকু সময় তার সঙ্গে গল্পগুজব বা আড্ডা হয় তার সবটুকু সময়ই সাকিব দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা প্রকাশ করে থাকেন। লাজুক প্রকৃতির ছোট বেলার সেই ফয়সাল আজ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। মাগুরা তথা দেশের মুখ উজ্জল করেছেন নিজের যোগ্যতা দিয়েই বলে জানান তিনি।সাকিব আল হাসানের পাড়ার বন্ধু বর্তমানে বিকাশ লিমিডেটে ঢাকায় কর্মরত সেতু জাগো নিউজকে বলেন, সাকিব খেলাধুলায় যেমন ভালো তেমনি বন্ধু হিসেবেও খুব ভালো। সময় পেলেই বন্ধু-বান্ধবের খোঁজখবরও নিয়ে থাকে সাকিব। এছাড়া সাকিব দেশে থাকলে প্রায়ই বন্ধু-বান্ধব আয়োজিত বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে।সাকিবের অপর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রতিক জাগো নিউজকে বলেন, সাকিব খেলাধুলা নিয়েই বেশি পড়ে থাকতো। এছাড়া একটু লাজুক ও নীবর প্রকৃতির থাকায় তার তেমন কোনো বন্ধু মহল গড়ে উঠেনি। শৈশবে বন্ধু-বান্ধব বলতে হিরক, আমি (প্রতিক) ও রাসেল এ তিনজনেরই বেশি অন্তরঙ্গ ছিল। তবে শুভ, রাজীব, নয়নও সাকিবের ভালো বন্ধু বলে জানায় প্রতিক।বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের বাবা বিশিষ্ট ব্যাংকার কুটিল (সাহেব) জাগো নিউজকে জানান, ছোটবেলায় সাকিব খুবই নরম প্রকৃতির ছিলো। কোনো আড্ডা বা হৈচৈ-এর ভিতর থাকতো না। তবে স্কুল পাঠিয়ে খেলাধুলা করতে বেশি পছন্দ করতো। শতবাধা দিয়েও তাকে আটকে রাখা যেত না। মাগুরা জেলা দলের হয়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে সফলতার সঙ্গে ম্যাচ জয় করে ঘরে ফিরে আসতো ট্রফি হাতে নিয়ে। এগুলো দেখতে দেখতে ক্রীড়া অনুরাগী কুটিল সাহেবও একদিন সাকিবের খেলাধুলায় বাধা না দিয়ে বরং উৎসাহ উদ্দীপনা জুগিয়েছেন বিশ্বসেরা এই ক্রিকেট অলরাউন্ডারকে।এমএএস/আরআইপি