সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের নামে শত শত ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্লক বা অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের ফেসবুক পেজটি সচল বা পুনরুদ্ধার করতে বিবাদী নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
Advertisement
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের ফেসবুক পেজটি পুনরুদ্ধার এবং তার নামে থাকা ভুয়া ফেসবুক পেজ বন্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বরাবরে করা আবেদন চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রুল জারি ও আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী মো. তারিকুল ইসলাম নিজেই।
এ-সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (২ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদ আল রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. তারিকুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওসমান চৌধুরী।
Advertisement
এর আগে, সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের নামে শত শত ভুয়া ফেসবুক আইডিসহ সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধ বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা অবিলম্বে বন্ধ করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে।
ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তারিকুল ইসলাম গত ২৫ মে হাইকোর্টর সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন করা হয়েছে।
গত ২০ মে ডাক ও রেজিস্ট্রার যোগে এ-সংক্রান্ত বিষয়ে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের পক্ষে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তারিকুল ইসলাম। নোটিশে ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের নামে যত ভুয়া ফেসবুক আইডি রয়েছে তা বন্ধ করে ডা. হুমায়ুন কবিরের নামে তার মূল যে আইডিটি বন্ধ তা চালু করার দাবি জানানো হয়। ভেরিফায়েড পেজটি পুনরায় চালু করা, ভুয়া পেজ ও প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন বন্ধে ব্যবস্থা এবং প্রতারকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে সরকার ও ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন ডা. জাহাঙ্গীর কবির। লিগ্যাল নোটিশের পর এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিট আবেদন করা হয়েছে।
রিটের বিষয়ে আইনজীবী তারিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ১০০টি আইডি ভুয়া রয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা না নিয়ে ভেরিফায়েড আইডি ডিজঅ্যাবল করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য জিডিও করা হয়েছে। গত ১২ মে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদনও দেন ডা. জাহাঙ্গীর কবির।
Advertisement
‘ফেসবুক পেজ পুনরুদ্ধার ও ভুয়া পেজ বন্ধ করার আবেদন’ শীর্ষক ওই আবেদনে ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জনস্বাস্থ্য সচেতনতা ও ওষুধমুক্ত জীবনযাপন নিয়ে কাজ করে আসছি। আমার পরিচালিত ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ যেখানে তিন দশমিক ছয় মিলিয়নের বেশি মানুষ যুক্ত ছিলেন। সেই পেজ গত ২৪ এপ্রিল হঠাৎ বন্ধ করে দেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ এপ্রিল বাড্ডা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমার বিশ্বাস, এ পেজের মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বিনামূল্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা পেয়ে উপকৃত হচ্ছিলেন।
এদিকে একই নামে বহু ভুয়া পেজ ও বিজ্ঞাপন চালু রয়েছে, যেগুলো আমার নাম-ছবি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করছে। এসব প্রতারকদের কারণে আমার সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।
জাহাঙ্গীর কবির ভেরিফায়েড পেজটি পুনরায় চালু করা, ভুয়া পেজ ও প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন বন্ধে ব্যবস্থা এবং প্রতারকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন। তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি আইনি নোটিশ দেন। নোটিশে সাত দিনের মধ্যে ১২ মে দেওয়া আবেদন অনুসারে ব্যবস্থা চেয়েছেন। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তিনি হাইকোর্ট বিভাগে রিট আবেদন করেন।
এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম