ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাশ্মীর সফরে যাচ্ছেন। যা হবে গত মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর তার প্রথম সফর। সফরে তিনি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে বুধবার (৪ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।
Advertisement
হিমালয়ের মুসলিম-অধ্যুষিত কাশ্মীর অঞ্চল ভারত ও পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। যা ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বিভক্ত।
মোদী শুক্রবার চেনাব সেতুর উদ্বোধন করবেন, যা এক হাজার ৩১৫ মিটার দীর্ঘ একটি স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত সেতু। এটি দুটি পর্বতকে সংযুক্ত করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এই প্রকল্পটি কাশ্মীর উপত্যকার সঙ্গে দেশের বাকি অংশের মধ্যে সারাবছর নির্বিঘ্ন রেল যোগাযোগ স্থাপন করবে।
Advertisement
গত মাসে পরমাণু শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তান চার দিনব্যাপী একটি তীব্র সংঘাতে জড়ায়, যা ১৯৯৯ সালের পর সবচেয়ে বড় সামরিক মুখোমুখি পরিস্থিতি ছিল। পরে ১০ মে উভয় পক্ষ একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
সংঘাতে উভয়পক্ষ মিলিয়ে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও কামানের গোলার আঘাতে প্রাণহানি ঘটে।
এই উত্তেজনার সূচনা হয়েছিল ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনার পর। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। যদিও ইসলামাবাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা গত ৩৫ বছর ধরে স্বাধীনতা কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
Advertisement
উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেলপথটি ২৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এতে রয়েছে ৩৬টি সুড়ঙ্গ ও ৯৪৩টি সেতু। এই প্রকল্পকে বলা হচ্ছে আঞ্চলিক চলাচলে রূপান্তর ও সামাজিক-অর্থনৈতিক সংহতির অনুঘটক। এই রেলপথের কেন্দ্রবিন্দু চেনাব সেতু।
ভারতীয় রেলওয়ে বলছে, ২৪ মিলিয়ন ডলারের এই সেতু সাম্প্রতিক ইতিহাসে ভারতের রেল প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বেসামরিক প্রকৌশল চ্যালেঞ্জ ছিল।
এই সেতু কেবল মানুষ ও পণ্য নয়, সৈন্য চলাচলেও সহায়ক হবে। যা এতদিন কেবল দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা বা বিমানপথে সম্ভব ছিল।
এটি কাত্রা শহর থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত যাত্রার সময় অর্ধেকে কমিয়ে আনবে। সেতুটি লাদাখেও বিপ্লব ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চীন ও ভারত বিশ্বের দুই বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ, দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত প্রভাব বিস্তারে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। ২০২০ সালে তাদের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন ভারতীয় ও ৪ জন চীনা সেনা নিহত হয়।
সূত্র: এএফপি
এমএসএম