অর্থনীতি

ঢাকায় মসলার দোকানগুলোতে শেষ মুহূর্তে ক্রেতার ভিড়

ঢাকায় মসলার দোকানগুলোতে শেষ মুহূর্তে ক্রেতার ভিড়

রাত পোহালেই মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। ঈদের আগের দিন শুক্রবার (৬ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মসলার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা গেছে। বিশেষত এদিন মসলার দোকানে নিম্নআয়ের মানুষদের ভিড় বেশি চোখে পড়েছে।

Advertisement

বিভিন্ন দোকানে ভিড় করে সামর্থ্য অনুযায়ী, শুকনা মরিচ, এলাচ, জিরা, দারচিনি, লবঙ্গ, পেস্তা বাদাম, কাজু বাদাম, হলুদের গুঁড়াসহ বিভিন্ন মসলা কিনছেন ক্রেতারা। একই সঙ্গে আদা, পেঁয়াজ ও রসুনও কিনছেন অনেকেই। কোনো কেনো দোকানে ক্রেতার ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রেতাকে। কোনো কোনো ক্রেতাকে দোকানের সামনে বেশ কিছু সময় দঁড়িয়েও থাকতে হচ্ছে। বিক্রি বাড়লেও মসলার দাম নতুন করে বাড়েনি বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।

রামপুরার মোল্লাবাড়িতে মসলা বিক্রেতা মো. টিপু বলেন, প্রতিবছর কোরবানির ঈদের মসলা বিক্রি বেশ ভালো হয়। এবারও বিক্রি ভালো হচ্ছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) ক্রেতাদের ভালো ভিড় ছিল। আজও সকাল থেকে ক্রেতাদের যথেষ্ট ভিড় রয়েছে। মধ্যরাত পর্যন্ত এমন ভিড় থাকবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে সব বাসাবাড়িতেই মাংস রান্না হয়। যাদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাদের বাড়িতেও যথেষ্ট পরিমাণ মাংস থাকে। আর মাংস রান্না করতে হলে তো মসলা লাগবেই। যার যেটুকু সামর্থ্য, সেই অনুযায়ী মসলা কিনছে। ২০ টাকা, ৩০ টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা যে যেভাবে চাচ্ছে আমরা সেভাবে বিক্রি করছি।

Advertisement

হাজিপাড়ার মসলা বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আমি সাধারণত পেঁয়াজ, রসুন, আদা বিক্রি করি। কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে কয়েকদিন ধরে দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, জিরা বিক্রি করছি। বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি বাড়লেও মসলার দাম বাড়েনি।

রামপুরা বাজার থেকে মসলা কেনা রোকেয়া বেগম নামের একজন বলেন, আমি একটি গার্মেন্টেসে কাজ করি। আমার স্বামী রিকশা চালায়। আমাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। আগামীকাল সবাই মিলে পেট ভরে মাংস খাবো, তাই মসলা কিনতে এসেছি।

তিনি বলেন, আমরা কোরবানি দিচ্ছি না। কোরবানি দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। কোরবানি না দিলেও আগামীকাল ভালোই মাংস পাবো বলে আশা করছি। গত বছর বেশ ভালো মাংস পেয়েছিলাম। অনেকদিন ছেলে-মেয়েকে মনমতো মাংস খাওয়াতে পারিনি। আশা করি কালকে ওরা খুশি মতো মাংস খেতে পারবে।

মোল্লাবাড়ি থেকে মসলা কেনা সালেহা নামের আরেকজন বলেন, কাল ঈদ। তাই আজ কিছু মসলা কিনতে এসেছি। ২০ টাকার দারুচিনি, ৩০ টাকার এলাচ ফল, ১০ টাকার তেজপাতা, ১০ টাকার শুকনা মরিচ কিনেছি। আমরা কোরবানি দিচ্ছি না। কোরবানি না দিলেও ঢাকায় কোরবানির সময় ভালো মাংস পাওয়া যায়। গত বছর আমার স্বামী মাংস কাটাকাটির কাজ করেছিল, সেখান থেকে মাংস পেয়েছিলাম। এছাড়া আরও কয়েক জায়গা থেকে মাংস পেয়েছিলাম। এবারও পাবো আশা করি। ঈদের দিন মাংস রান্না করার জন্যই মসলা কিনতে এসেছি।

Advertisement

তালতলা মার্কেট থেকে মসলা কেনা মিলন শেখ বলেন, আগামীকাল ঈদ। বাসায় প্রচুর মাংস রান্না হবে। মুরগির রোস্ট হবে। ডিসের কোরমাসহ নানা পদের রান্না হবে। কাজের ব্যস্ততার কারণে আগে মসলা কিনতে পারিনি। তাই আজ মসলা কিনতে এসেছি। রোস্টের মসলা, কাজু বাদম, পেস্তা বাদম, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, জিরাসহ আরও কয়েক ধরনের সমলা কিনেছি।

তালতলার মার্কেটের ব্যবসায়ী হোসেন বলেন, প্রতি কোরবানির ঈদেই সমলা বিক্রি বেশি হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে মাংসা রান্নার মসলা বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে গতকাল ও আজ ক্রেতাদের ভিড় বেশি। এখন তো আর সময় নেই। কাল তো আর কেউ কেনাকাটা করতে পারবে না। তাই যারা এখনো কেনাকাটা শেষ করেতে পারেনি, তারা আজ কিনতে আসছে।

এমএএস/এমকেআর/জেআইএম