রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। যারা কোরবানির পশু কিনতে পারেননি তার ছুটে আসছেন রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে। ঈদের রাতেও রাজধানীবাসী এখন হাটমুখো। পশু বেচাকেনা চলবে ঈদের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত।
Advertisement
শুক্রবার (৬ জুন) দিবাগত রাতে শনির আখড়া ও কাজলা হাটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে শনির আখড়ায় ও দনিয়া এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অস্থায়ী পশুর হাটে চলছে জমজমাট বেচাকেনা।
শুক্রবার সকালে, এরপর বৃষ্টির মধ্যে দুপুরে পশু বিক্রি হলে দিনশেষে বিক্রি বাড়তে থাকায় আরও গরুর আমদানি শুরু হয়। বিকেল থেকে হাট ঘুরে ক্রেতার ঢল দেখা গেছে। প্রিয় কোরবানির পশু কিনতে রাতেই হাটে এসেছেন অনেকে। কেউ কেউ রাতভর হাটে অপেক্ষা করছেন ভালো মানের পশুর আশায়। এই হাটে মিলছে নানা জাতের গরু, ছাগল, খাসি, মহিষ এমনকি দুম্বাও। ক্রেতারা দরকষাকষি করে খামারি ও ব্যাপারীদের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছিলেন পছন্দের পশু।
প্রতিবারের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর। এখন শেষদিকে বড় গরু বিক্রি হচ্ছে বেশি। বড় গরুর প্রতি আগ্রহ কিছুটা কম থাকায় হাট শুরুর দিকে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন অনেক বিক্রেতা।
Advertisement
কিন্তু এবার গরু নিয়ে আশাবাদী খামারি ও ব্যাপারীরা বলছেন, গত কয়েকদিন তেমন বিক্রি না হলেও শুক্রবার ভোর থেকে পশু বিক্রি জমে উঠেছে। বিকেলের মধ্যে বেশিরভাগ পশু বিক্রি হয়ে মোটামুটি খালি হওয়ার মতো অবস্থা। এরমধ্যে গরু বোঝাই গাড়ি আসতে শুরু হয় এবং রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ট্রাক বোঝাই করে গরু এনে শনির আখড়ার হাটগুলোতে নামানো হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ থেকে আসা গরুর ব্যাপারী সোহাগ জাগো নিউজকে বলেন, আজ সকালে ১১টা গরু নিয়ে আসছিলাম, এখন একটা আছে। এটাও দরদাম হচ্ছে, বিক্রি হয়ে যাবে। দাম ভালো পেয়েছি। গরুর চাহিদা বেড়েছে।
জামালপুর থেকে আসা বিল্লাল হোসেস নামের এক ব্যাপারী জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে বিক্রি ভালো হচ্ছে। বিকেলের পর ভিড় আরও বাড়বে। ১২টা গরু বিক্রি করেছি, আরও ১টা আছে।
ফরিদপুরের সবুজ জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েকদিন একটাও গরু বিক্রি হয়নি। আজ ১৫টা বিক্রি হয়েছে। ভেবেছিলাম লোকসান হবে, কিন্তু বিক্রি হওয়ায় এখন টেনশনমুক্ত আমি।
Advertisement
নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে হাটে গরু কিনতে আসেন শাহিন আহমদ। তার বাজেট ছিল দুই লাখ টাকা। তিনি বলেন, কয়েকটা গরুর দরদাম করছি। দেখি কী হয়।
কুতুবখালী থেকে আসা জামাল মিয়া বলেন, সবাই মিলে এসেছি। দুই লাখে একটা গরু কিনলাম।
হাটের নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে উল্লেখ করে কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মামুন জাগো নিউজকেবলেন, শুক্রবার ভোর থেকে হাটে ভিড় বাড়ছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে টিম কাজ করছে। নারীদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। ছিনতাই, চুরি বা দালালের দৌরাত্ম্য যেন না হয়, সে বিষয়ে আমরা সজাগ আছি।
স্থিতিশীলতা ও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে হাটের কাউন্টার ম্যানেজার সৈয়দ বাশার বলেন, এখন পর্যন্ত হাটের পরিবেশ স্থিতিশীল। দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা দুই পক্ষই মোটামুটি সন্তুষ্ট ছিল। তবে, শুক্রবার সকাল থেকে পশুর চাহিদা বাড়তে থাকে। তাই পশুর সংখ্যা দুপুরে বৃষ্টির পর বাড়ানো হয়েছে। বিকেল থেকে হাট আরও জমে উঠেছে। রাতেও গরুর গাড়ি আসছে। পশু বেচাকেনা চলবে সকাল ৭ টা পর্য়ন্ত।
এফএইচ/এএমএ