কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার জামাতে মুসল্লিদের ঢল নামে। শনিবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় জামাত শুরু হয়। জামাতে ইমামতি করেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
Advertisement
ঈদগাহ ময়দানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এ দিকে জামাতকে ঘিরে নেওয়া হয় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র্যাব, পুলিশের পাশাপাশি মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ছিল দুই প্লাটুন বিজিবি।
এর আগে সকাল থেকে মুসল্লিরা আসতে থাকেন ঈদগাহের দিকে। প্রতি বছর ঈদের জামাতে এখানে লাখো লাখো মানুষের ঢল নামে। বড় জামাতে নামাজ আদায় করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায় তাই এখানে প্রতি বছর ঈদের জামাতে অংশ নেয় মুসল্লি।
Advertisement
দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রয়েছে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল নামে দুটি ট্রেন। যা চলে ভৈরব-ময়মনসিংহ রোডে।
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহা. কাজেম উদ্দিন জানান, ঈদুল আজহায় জামাতকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, মাইনোকোলার, সিসি ক্যামেরাসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজাবে রহমত বলেন, ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সব ব্যবস্থায় নেওয়া হয়। দূরের মুসল্লিদের জন্য ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করছে দুটি বিশেষ ট্রেন।
ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ জঙ্গি হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু তারপরও ভাটা পড়েনি ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের সমাগমে। কিন্তু করোনার কারণে গত দুই বছর ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
Advertisement
জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে ভবিষ্যতে মাঠে মুসল্লিদের প্রাচুর্যতা প্রকাশে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। অন্য একটি মতে, সেই দিনের সেই জামাতে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোক জমায়েত হন। ফলে ‘সোয়া লাখের অপভ্রংশ হয়ে ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়।
পরে ১৯৫০ সালে স্থানীয় দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ (মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর) ঈদগাহের জন্য ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করেন। এ মাঠে ২৬৫টি কাতার আছে। প্রতিটি কাতারে ৫০০ মুসল্লি নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারেন।
এসকে রাসেল/আরএইচ/এমএস