দেশজুড়ে

লোকারণ্য কক্সবাজার সৈকত

লোকারণ্য কক্সবাজার সৈকত

কোরবানির ঈদের ছুটিতে পর্যটক-দর্শনার্থীর ভিড়ে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে কক্সবাজার সৈকত। ৫ জুন থেকে ঈদের ছুটি শুরু হলেও সৈকতে ভিড় বেড়েছে ৮ জুন থেকে। সোমবার থেকে আরও বাড়তে থাকে লোকসমাগম। মঙ্গলবারও (১০ জুন) একই অবস্থা। সামনের শুক্রবার (১৩ জুন) পর্যন্ত এমন অবস্থা থাকতে পারে বলে ধারণা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।

Advertisement

সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্ট, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক, মেরিন ড্রাইভসহ আশপাশের পর্যটন স্পটগুলো মুখর হয়ে উঠে মানুষের উপস্থিতিতে। সি সেইফ লাইফগার্ডের সিনিয়র কর্মী মো. ওসমান জানান, কেউ সমুদ্র স্নান, কেউ বালিয়াড়িতে ছবি তোলা, কেউ বা সওয়ারি হয়েছেন ঘোড়া কিংবা বিচ বাইকে। তবে সবচেয়ে বেশি মানুষ উপভোগ করছেন সূর্যাস্ত। কক্সবাজারের তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের বিপণন ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ নুর সোমেল বলেন, শুক্রবার পর্যন্ত ৭০-৮৫ শতাংশ বুকিং রয়েছে হোটেল কক্ষ।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সৈকতে যাওয়া আরিফুল ইসলাম বলেন, টানা ছুটি কম পাওয়া যায়। এবারের ঈদুল আজহা চাকরিজীবীদের জীবনে আনন্দ বাড়িয়েছে। সেই সুযোগ পরিবার নিয়ে কক্সবাজার ছুটে আসা।

আরেক পর্যটক কলিম উল্লাহ বলেন, গরমে সৈকতে লোকসমাগম কম হবে বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু রোদ-বৃষ্টির খেলায় পর্যটকের চাপ বেড়েছে। বেলাভূমিতে মানুষ বেশি থাকলে আনন্দও বেশি হয়।

Advertisement

স্থানীয় সাগরপ্রেমী জিয়াউর রহমান বলেন, শহরের কাছাকাছি বাড়ি হলেও কাজের চাপে পরিবার নিয়ে সাগর তীরে আসা হয় না। ঈদের ছুটিতে কাজের চাপ কম। এসময় পরিবারকে সৈকত উপভোগ করতে নিয়ে এসেছি। হোটেল সি নাইটের ব্যবস্থাপক শফিক ফরাজী বলেন, সোমবার থেকে নানা শ্রেণি-পেশার পর্যটক কক্সবাজার এসেছেন। আশা করা যায় ১৩ জুন পর্যন্ত কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় থাকবে। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ক্লাব ও ট্যুরস অপারেটর ওনার অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, যে কোনো বন্ধে তারকা হোটেলগুলোর কক্ষ আগাম বুকিং হয়। কিন্তু গেস্ট হাউজ, কটেজ, অ্যাপার্টমেন্টসহ অন্যান্য সেবাপ্রতিষ্ঠানে স্বল্প পরিসরে আগাম বুকিং হলেও অধিকাংশ ওয়াকিং গেস্টে উঠে। তবে এবারের কোরবানির ঈদে আগাম বুকিং আশানুরূপ। কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, কোরবানির ঈদের বন্ধেও গড় মিলিয়ে প্রায় ৫-৬ লাখ পর্যটক উপস্থিতি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শতকোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা যায়।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের এএসপি নিত্যানন্দ দাস বলেন, অতীতের মতো নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে ওয়াচ টাওয়ার থেকে করা হচ্ছে পর্যবেক্ষণ। এছাড়া সৈকতের প্রতিটি গোলঘরে সার্বক্ষণিক পুলিশ অবস্থান এবং মোবাইল টিমসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকেও পর্যটন স্পটে ঘুরছে পুলিশ। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, পর্যটকরা সৈকত নগরীর প্রাণ। ঈদের দীর্ঘ ছুটির আনন্দ ও সাগরের ঢেউ উপভোগে বিপুল সংখ্যক পর্যটক-দর্শনার্থী কক্সবাজারে ভিড় জমিয়েছেন। সবার ভ্রমণ আনন্দময় করতে নিরাপত্তা বলয় তৈরিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে একাধিক মোবাইল টিম মাঠে কাজ করছে। এদিকে বেলাভূমি দেখতে আসা পর্যটকদের সুবিধা-অসুবিধা পর্যবেক্ষণে মঙ্গলবার পর্যটন জোনের হোটেল-মোটেল এবং সৈকত তীর ঘুরে বেড়িয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্বরত) ফাতেমা রহিম ভীনা।

সায়ীদ আলমগীর/জেডএইচ/এমএস

Advertisement