ভারতের গুজরাটে ২৪২ আরোহী নিয়ে একটি প্লেন বিধ্বস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরই একটি আবাসিক এলাকায় গিয়ে ভেঙে পড়ে।
Advertisement
প্রত্যক্ষদর্শীদের তোলা ভিডিওতে দেখা যায়, প্লেনটি ভেঙে পড়ার পর প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে এবং আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে থাকে।
আপাতত দুর্ঘটনার কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রশাসন হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা যাচাই করছে।
এ দুর্ঘটনা ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ প্লেন দুর্ঘটনাগুলোর স্মৃতি আবারও সামনে এনেছে। নিচে ভারতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্লেন দুর্ঘটনা তুলে ধরা হলো:
Advertisement
১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর হরিয়ানার চরখি দাদরিতে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ আকাশপথের সংঘর্ষ ঘটে। সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৪৭ এবং কাজাখস্তান এয়ারলাইন্সের ইলিউশিন আইআই-৭৬ প্লেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই প্লেনে থাকা ৩৪৯ জনের সবাই নিহত হন। ভুল যোগাযোগের কারণে কাজাখ প্লেনটি নির্ধারিত উচ্চতা অতিক্রম করে নিচে নেমে আসে এবং সংঘর্ষ ঘটে।
ম্যাঙ্গালুরু এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা (২০১০)২০১০ সালের ২২ মে দুবাই থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট ৮১২ ম্যাঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে ছাড়িয়ে একটি খাদে পড়ে যায়। ১৬৬ জন আরোহীর মধ্যে ১৫৮ জনই নিহত হন। রানওয়ের চারপাশে ঢালু ভূমি থাকার কারণে এ দুর্ঘটনার মাত্রা ছিল ভয়াবহ।
কানিষ্কা বোমা হামলা (১৯৮৫)১৯৮৫ সালের ২৩ জুন এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৮২ যাত্রী নিয়ে কানাডা থেকে ভারত যাওয়ার পথে আয়ারল্যান্ড উপকূলে মাঝ আকাশে বিস্ফোরণে উড়ে যায়। বিমানে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাতা বোমা ছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়, যা বিশ্ব ইতিহাসে প্লেনে অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা।
কোঝিকোড় দুর্ঘটনা (২০২০)বৃহস্পতিবারের (১২ জুন) আগে এয়ার ইন্ডিয়ার সবশেষ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০২০ সালে। সেসময় তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি ফ্লাইট কেরালার কোঝিকোড় বিমানবন্দরে বৃষ্টিভেজা রানওয়েতে অবতরণের সময় ছিটকে গিয়ে দুই ভাগ হয়ে যায়। এতে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত খারাপ এবং দৃষ্টিসীমাও ছিল কম।
Advertisement
বেসামরিক প্লেন দুর্ঘটনার পাশাপাশি ভারতের সামরিক প্লেন, বিশেষ করে মিগ-২১ জেট নিয়ে বহুবার দুর্ঘটনার খবর এসেছে। প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে বহু পাইলটের মৃত্যু হয়েছে, যা প্রতিরক্ষা খাতে আধুনিকায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি সামনে এনেছে।
সূত্র: ইকোনমিক টাইমসকেএএ/