দেশজুড়ে

এটিএম বুথে টাকা নেই, ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা

এটিএম বুথে টাকা নেই, ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা

মো. মোতালেব হোসেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারি গ্রামের বাসিন্দা। কয়েকটি বুথ ঘুরেও টাকা না পেয়ে অবশেষে ময়মনসিংহ শহরে চলে আসেন। এখানেও দুই বুথে টাকা না পেয়ে অবশেষে একই ব্যাংকের আরেকটি বুথ থেকে ১৩ হাজার টাকা তুলতে পেরেছেন। তবে শহর পর্যন্ত আসতে তার খরচ হয়ে গেছে ১০০ টাকা। বাড়িতে ফিরতে একই পরিমাণ টাকা খরচ হবে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান এ গ্রাহক।

Advertisement

শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে শহরের ছোট বাজার এলাকায় অবস্থিত ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে গিয়ে দেখা যায়, বুথ থেকে বের হয়েছেন মোতালেব। এসময় কথা হয় তার সঙ্গে।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমার বাড়ি গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারি গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায়। পারিবারিক সমস্যার কারণে জরুরি ভিত্তিতে ১৩ হাজার টাকা প্রয়োজন। এজন্য গ্রাম থেকে অটোরিকশা ভাড়া করে ময়মনসিংহ সদরের শম্ভুগঞ্জ বাজারে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথে টাকা তুলতে যাই। কিন্তু বুথে গিয়ে দেখি টাকা নেই। এই অবস্থায় চলে আসি শহরের ছোট বাজার এলাকার বুথে। এখানে তিনটি বুথ রয়েছে। এর মধ্যে দুই বুথে টাকা নেই। পরে অন্য বুথটি থেকে টাকা তুলতে পেরেছি।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বুথে টাকা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছি। সবগুলো বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখা প্রয়োজন। জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে এসে গ্রাহকদের ফিরে যেতে হচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: রংপুরে এটিএম বুথে টাকার সংকট, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

এছাড়া শহরের বিভিন্ন ব্যাংকের বুথে গিয়েও বেশিরভাগ বুথে টাকা না থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রাহকরা জানিয়েছেন, তারা এক বুথে থেকে আরেক বুথে ঘুরছেন। টাকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। যে বুথে টাকা রয়েছে, সেখানে গ্রাহকরা ভিড় জমাচ্ছেন।

বড় বাজারে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, তিনটি বুথ পাশাপাশি। এরমধ্যে একটি বুথে রয়েছে টাকা। এই বুথ থেকে টাকা তুলতে ভিড় জমিয়েছেন গ্রাহকরা। ওই দুই বুথ থেকে টাকা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।

বুথের নিরাপত্তাকর্মী বলছেন, বুথ নষ্ট হয়ে গেছে। তবে গ্রাহকরা বুঝতে পারছেন, বুথে টাকাই নেই।

সুমন আহমেদ নামের আরেক গ্রাহক জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল বুধবার (১২ জুন) শহরের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি বুথে গিয়েও টাকা পাইনি। আজ (শুক্রবার) বিকেলেও কয়েকটি বুথ ঘুরে টাকা পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে এক গ্রাহকের কাছ থেকে জানতে পারি, ছোট বাজারে অবস্থিত ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের দুই বুথে টাকা না থাকলেও একটি বুথে টাকা রয়েছে। পরে এখানে আসি। তবে এসে দেখি গ্রাহকের সংখ্যা অনেক বেশি। তবুও অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে টাকা তুলতে পেরেছি।

Advertisement

এই বুথের নিরাপত্তা প্রহরী মহরম আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমার মনে হয় ঈদের বন্ধের কারণে বুথে থাকা টাকা শেষ হয়ে গেছে। তবে এখনো একটি বুথ থেকে টাকা তোলা যাচ্ছে। এটার টাকাও শেষ হলে গ্রাহকরা আরও ভোগান্তিতে পড়বেন।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের পাশেই উত্তরা ব্যাংকের বুথ। এই ব্যাংকের বুথে টাকা না থাকায় গ্রাহকরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। বুথ থেকে কিছুটা দূরে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন নিরাপত্তা প্রহরী শামীম মিয়া।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বুথে এক টাকাও নাই। তাই গ্রাহকরা টাকা তুলতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। আমাদের বুথের উল্টো পাশে এনআরবিসি ব্যাংকের বুথ। এই বুথও ফাঁকা। এছাড়া শহরের বেশিরভাগ বুথেই টাকা নেই। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই বুথ থেকে টাকা পাওয়া যাবে বলে জানতে পেরেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডাচ বাংলা ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বুথে টাকা থাকার কথা। তবে এই মুহূর্তে টাকা না থাকার বিষয়টি তার জানা নেই।

এ বিষয়ে প্রাইম ব্যাংক ময়মনসিংহ শহরের স্বদেশী বাজার শাখার ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোন ব্যাংকের বুথে টাকা নেই তা আমার জানা নেই। তবে আমাদের বুথ থেকে টাকা তোলা যাচ্ছে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/এমএন/এএসএম