প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল-রাজবাড়ী আঞ্চলিক সড়ক সংস্কারের কাজ ফেলে উধাও হয়ে গেছেন ঠিকাদার। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি বিদেশে পালিয়ে যান বলে জানা গেছে। ফলে সড়কে বিছানো ইটের খোয়া উঠে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি জমে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
Advertisement
কিন্তু গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই বিদেশে পালিয়ে গেছেন ঠিকাদার। এর পর থেকে এখনো কাজ শেষ হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলজিইডির অধীনে এডিবি ও জিওবির অর্থায়নে নাচোল থেকে রাজবাড়ী বাজারের শেষ সীমানা পর্যন্ত ২ দশমিক ২২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ চলছিল। কুমিল্লার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোস্তফা জামান প্রাইভেট লিমিটেড এ কাজ পায়। এছাড়া সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল জাকারিয়া এন্টারপ্রাইজ। তারা যৌথভাবে সড়কটি সংস্কারের কথা ছিল। সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় তিন কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সড়কের কাজ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের জুন মাসের ৫ তারিখে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলী হাসান বলেন, সড়কের কাজ শুরুর কিছুদিন পরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এসময় সড়কে খোয়াসহ সড়ক মেরামতের বিভিন্ন সরঞ্জাম ফেলেই গা ঢাকা দিয়েছেন ঠিকাদার। শুনেছি বিদেশে পালিয়ে গেছেন তিনি। তখন থেকে সড়কের কাজ বন্ধ। এতে বিভিন্নস্থানে গর্ত হয়ে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি এসব গর্তে জমে যাচ্ছে পানি।
Advertisement
ইসারুল ইসলাম নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, নাচলের সঙ্গে নওগাঁর নেয়ামতপুর উপজেলার যোগাযোগমাধ্যম এই সড়ক। নেয়ামতপুর যেতে হয় এই সড়ক ব্যবহার করে। কিন্তু সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। একেবারে বেহাল দশা। বিভিন্ন স্থানে গর্ত পানি জমে থাকে।
নাচোল সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৫ আগস্টের আগে দুই মাস কাজ করে ঠিকাদার উধাও হয়ে যান। তারপর কয়েক মাস আগে কাজ করার জন্য যন্ত্রপাতি নিয়ে এলেও অজানা কারণে শুরু হয়নি।
তিনি বলেন, নাচোলের সঙ্গে নওগাঁ জেলার নেয়ামতপুর উপজেলার যোগাযোগ হয় সড়ক ব্যবহার করে। কিন্তু বর্তমানে সড়কটির বেহাল দশা। এই এলাকার মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোস্তফা জামান প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মো. লিটন আলী পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Advertisement
সাব ঠিকাদার জাকারিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জাকারিয়া হোসেন বলেন, ঠিকাদার মো. লিটন আলী বিদেশে চলে গেছেন। এ জন্য কাজ বন্ধ ছিল। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া বেসিক প্ল্যান্ট মেশিন না পাওয়ার কারণে কাজটি সময়মতো করা যায়নি, চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলাম। তারা চারমাস সময় বেঁধে দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কাজটি আমাদের শেষ করতে হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বৃষ্টির জন্য কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের কাজ চলমান আছে। সাব ঠিকাদার জাকারিয়া এন্টারপ্রাইজের জাকারিয়া হোসেনের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। চার মাস সময় বেঁধে দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে তাদের কাজ শেষ করতে হবে।
সোহান মাহমুদ/এমএন/জেআইএম