জাতীয়

বাধা দিয়ে তারুণ্যের শক্তি এনসিপিকে থামানো যাবে না: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় এনসিপির জুলাই পদযাত্রায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। বাধা দিয়ে তারুণ্যের শক্তি এনসিপিকে থামানো যাবে না। বাধা দিলে প্রতিরোধ করা হবে।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সত্য উন্মোচন করায় বাঁশখালীতে এনসিপির সংগঠককে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২০ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেট সংলগ্ন বিপ্লব উদ্যানে পদযাত্রা শেষে জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে পদযাত্রা শুরু করে বহদ্দারহাট, মুরাদপুর হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা বিপ্লব উদ্যানের জনসভায় যোগ দেন।

এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, চট্টগ্রামের বিদ্রোহের নগরী। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেখেছি এ চট্টগ্রামের প্রতিরোধের দুর্গ হিসেবে গড়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম ইতিহাসের পাতায় পাতায় সমৃদ্ধ করেছে। সিপাহী বিপ্লবে হাবিলদার রজব আলীর কথা জানি আমরা। আমরা জানি সূর্যসেন, প্রীতিলতার কথা। ১৯৭১ সালে এ চট্টগ্রাম থেকে মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, গুটিকয়েক মাফিয়ার কাছে চট্টগ্রামকে আর ছেড়ে দেবো না। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বসবাসকারী সব মানুষ তার ন্যায্য অধিকার পাবে। চট্টগ্রামকে আমরা বহু ভাষা, বহু ধর্ম বহু সংস্কৃতির নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নানা পরাশক্তি চট্টগ্রাম নিয়ে চোখ তুলে তাকাচ্ছে। আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই চট্টগ্রাম জাতীয় নিরাপত্তার অংশ। চট্টগ্রাম সার্বভৌমত্বের ভিত্তি। যদি কেউ চট্টগ্রামের দিকে চোখ তুলে তাকায়, সমগ্র বাংলাদেশে একসঙ্গে প্রতিরোধ করা হবে।

নাহিদ বলেন, চট্টগ্রামে অপরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা রয়েছে। পানির ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে। লুটতরাজ, মাফিয়া শক্তির কারণে বেহালদশা। এ চট্টগ্রামকে নতুন করে সাজাতে হবে। অর্থনীতির লাইফলাইন এ চট্টগ্রাম। এনসিপি চট্টগ্রামকে শক্তিশালী করতে কাজ করবে।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, নতুন বাংলাদেশে আমরা লুটপাটের রাজনীতি দেখতে চাই না। বাংলাদেশের মানুষকে বিল্ডিং, ব্রিজ, কালভার্ট দেখিয়ে টাকাপয়সা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। প্রতিটি পয়সার হিসাব জনগণের কাছে উন্মোচন করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে কেউ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করে পার পাবে না।

দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ যথেষ্ট সাহসী ও বিপ্লবী। তরুণ প্রজন্ম হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছে। এখন আমাদের নীতিনির্ভর রাষ্ট্র লাগবে, ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র লাগবে। আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করতে হবে। বাংলাদেশ কারো বাপের না। এ দেশ জনতার। বাংলাদেশ যখন পথ হারায়, চট্টগ্রাম তখন প্রতিরোধ করে। তরুণরা রুখে দাঁড়ালে ইতিহাস তৈরি হয়। যেভাবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে সেটাই প্রমাণ করেছে।

বিকেল তিনটার পর থেকে বিপ্লব উদ্যানে জড়ো হতে শুরু করেন এনসিপির নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণের বিভিন্ন উপজেলা এবং মহানগরীর বিভিন্নস্থান থেকে নেতাকর্মীদের মিছিল নিয়ে বিপ্লব উদ্যানে আসেন।

কর্মসূচিতে এনসিপির নেতাকর্মীরা ‘কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তোর বাপ-দাদার’, 'মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ ‘ক্ষমতা, না জনতা/জনতা, জনতা’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এতে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলাম, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এমএএইচ/