জাতীয়

‘আমার বন্ধুরা পুড়ে যাচ্ছে, ওদের বাঁচাও’

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় আহত কলেজের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন। গত দুদিনের তুলনায় এখন অপেক্ষাকৃত ভালো আছেন তিনি। শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাতে স্বাভাবিকভাবে খাবারও খেতে পেরেছেন। রাতে ঘুমও ভালো হয়েছে তার। ঘুম থেকে উঠে সকালে নাস্তাও হয়েছে, চিকিৎসক, নার্স ও পরিবারের সদস্যরাও সার্বক্ষণিক তার পাশে থাকছেন।

তবে শুক্রবার সন্ধ্যায় সেদিনের বিমান দুর্ঘটনার স্মৃতি মনে করে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে তিনি বলতে থাকেন, আমার বন্ধুরা আগুনে পুড়ে যাচ্ছে, ওদের বাঁচাও। ওদের কীভাবে বাঁচাব, আমিও তো পুড়ে যাচ্ছি! এ সময় মনোচিকিৎসক ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে আশ্বস্ত করে বলেন, তোমার বন্ধুরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ওরা ভালো আছে। তুমিও তো ভালো আছো। এ কথা বুঝিয়ে বলার পরই শান্ত হন তিনি।

বিমান দুর্ঘটনায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক (সাইকিয়াট্রি) ডা. মোহাম্মদ জুবায়ের মিয়া শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে জাগো নিউজ এর এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, বিমান দুর্ঘটনায় ১৮ বছরের এক কলেজ শিক্ষার্থী গত দুদিন যাবৎ তাদের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

তিনি জানান, এ শিক্ষার্থী সেদিন উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন। শারীরিকভাবে খুব বেশি আঘাতপ্রাপ্ত না হলেও উদ্ধার কার্যক্রমের সময় শিক্ষার্থীদের দগ্ধ হওয়ার বিভিন্ন ঘটনা তার মনে আঘাত হেনেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ওই শিক্ষার্থী অ্যাকিউট স্ট্রেস রিঅ্যাকশনে ভুগছেন। সেদিনের ঘটনার বিভিন্ন স্মৃতি মনে করে মাঝে মাঝে ওই ঘটনার বর্ণনা (বন্ধুরা পুড়ে যাচ্ছে ওদের বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও) ইত্যাদি বলছেন।

গত দুদিন যাবৎ তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে তাকে বোঝানো হচ্ছে যে, তার বন্ধুরা ভালো আছে, তিনিও বিপদমুক্ত।

ডা. মোহাম্মদ জুবায়ের মিয়া জানান, গত দুদিনের তুলনায় আজ (শনিবার) ওই শিক্ষার্থী অপেক্ষাকৃত ভালো আছেন। তিনি বাড়ি ফিরে যেতে চাচ্ছেন । চিকিৎসকরা তাকে দ্রুতই বাড়ি ফিরে যেতে পারবে বলে আশ্বস্ত করছেন বলেও জানান এই চিকিৎসক।

গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান। এতে ওই যুদ্ধবিমানের পাইলট, স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ ৩৫ জন নিহত হয়েছেন।

এমইউ/এএমএ/এমএস