দেশজুড়ে

উত্তাল সাগর, ক্ষতির মুখে সেন্টমার্টিন

উত্তাল সাগর। এরই মধ্যে সেন্টমার্টিনের চারপাশে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট বেড়েছে। ঢেউয়ের তোড়ে দ্বীপের গাছপালা, বাড়িঘর ভেঙে পড়ে যাচ্ছে।

সেন্টমার্টিন রক্ষায় বেড়িবাঁধসহ যাবতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে অচিরেই দ্বীপটি বিলীন হয়ে সাগরে চলে যাবে। এমনটি আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

তারা জানান, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাতায়াত করতে হয় নৌযানে। ভারী বৃষ্টি ও সাগরে কোনো বৈরী পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বর্ষার মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বেড়ে ২-৩ ফুট উঁচু হয়।

প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে সাগরের ঢেউয়ের ধাক্কায় দ্বীপের চারপাশের বাড়িঘর, গাছপালা, চাষের জমি ক্ষতির মুখে পড়ে। জলোচ্ছ্বাস হলে দ্বীপের মধ্যে ঢুকে পড়ে পানি। দ্বীপের বাসিন্দাদের প্রধান আয়ের উৎস পর্যটন ব্যবসা, মাছ ও কৃষি। সাগর উত্তাল হলে জেলেরা মাছ ধরতে যেতে পারেন না, পর্যটন মৌসুমে পুরো সময় দ্বীপে পর্যটক না গেলে আয় কমে যায়।

অপরদিকে সাগরের লবণাক্ত পানি ঢুকে নষ্ট হয় ফসলি জমি। সেই সঙ্গে টেকনাফ থেকে কিছুদিন কোনো খাদ্যপণ্য দ্বীপে নিতে না পারলে খাবারের সংকট দেখা দেয়। এখন টেকনাফের সঙ্গে সেন্টমার্টিনের নৌযান চলাচল বন্ধ।

সেন্টমার্টিনের জেলে একরাম হোসেন বলেন, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। উত্তাল সাগরের গর্জন এবং বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ছে। পানি দিনের পর দিন বাড়ছে। দ্বীপ রক্ষায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য সৈয়দ আলম মেম্বার বলেন, সাগরের পানি দ্বীপের চারপাশ ঘিরে রেখেছে। পানি আগের চাইতে ২-৩ ফুট বেড়েছে। বেড়িবাঁধ বা জিও ব্যাগসহ যে কোনো পরিকল্পনা করে দ্বীপ রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। অন্যথায় দ্বীপটি অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজুল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে আজ রোববার পর্যন্ত চারদিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচল বন্ধ। টেকনাফ থেকে ঠিক সময়ে কোনো পণ্য আনতে না পারলে দ্বীপে খাদ্য সংকট তৈরি হয়। বর্তমানে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে আজ চারদিন ধরে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে পারছি না। এতে করে দেড়-দুইশ মানুষ টেকনাফে আটকা পড়েছে। যদি আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তাহলে নৌযান চলাচল শুরু হবে। তখন আটকেপড়া লোকজন সেন্টমার্টিনে চলে যেতে পারবে।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিনে জোয়ারের পানি বাড়লে দ্বীপের মানুষের সমস্যা হয়। বিশেষ করে গতবছর থেকে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে। তবে যতটুকু জেনেছি পানি কিছুটা কমছে। দ্বীপের সমস্যার বিষয় উচ্চপর্যায় অবগত করা হয়েছে। তবে আগামীকাল নৌবাহিনীর একটি জাহাজে সেন্টমার্টিনে খাদ্যপণ্য যাবে।

জাহাঙ্গীর আলম/জেডএইচ/এমএস