আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া সবচেয়ে ব্যর্থ প্রকল্পগুলোর একটি বিমানবন্দর-গাজীপুর বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি)। দুর্বল পরিকল্পনা, অসম্পূর্ণ নকশা আর বাস্তবায়নে প্রকল্পটি পরিণত হয়েছে বোঝায়। এটিকে দানবীয় ও অপরিকল্পিত প্রকল্প হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, এ ধরনের অপরিকল্পিত ও দানবীয় মেগা প্রকল্পে ভুল নকশা চিন্তারও বাইরে। এ ধরনের প্রকল্প কিভাবে নকশা করা হয়েছে, কারা সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে এগুলো আমরা তদন্ত করে দেখবো।
রোববার (২৭ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় মোট ৮ হাজার ১৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় বিআরটি প্রকল্পটির ২ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প ও গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও যোগাযোগ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ ও পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ একনেক সদস্যরা।
বিআরটি প্রকল্পের সমালোচনা করে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিআরটি প্রকল্পটিতে ভুল নকশার পরিমাণ চিন্তারও বাইরে। যারা এ প্রকল্পটির পরিকল্পনা করেছিলেন তাদের বাংলাদেশের আঞ্চলিকতা বোঝা উচিত।
দানবীয় ও অপরিকল্পিত প্রকল্প আখ্যা দিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বিআরটি প্রকল্পটি দানবীয় ও অপরিকল্পিত। কোথাও ওপর দিয়ে গেছে, কোথাও নিচে গেছে। এতে লিফট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাসা বাড়ির লিফটই তো কিছুদিন পর পর নষ্ট হয়ে যায়। এটি তো পাবলিক চলার লিফট। যারা এর পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত, যারা নকশা করেছেন এবং যারা প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই করেছেন- সব বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিআরটি প্রকল্পটি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার যৌথ অর্থায়নে কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। গাজীপুর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এ ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল ২ হাজার ৩৯ কোটি টাকায়। নানা ধাপে ব্যয় বাড়িয়ে এটি এখন ৬ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকায় ব্যয় প্রাক্কলন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
রোববারের একনেকে প্রকল্পটির ব্যয় ২ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু একনেক সেটি অনুমোদন করেনি।
এমওএস/এসএনআর/জেআইএম