সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ২০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ৩০ লাখ টাকার মাছ লুটের ঘটনায় বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান টুটুল বিরুদ্ধে দল থেকে পৃথক দুটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমিনুর রহমান টুটুল উপজেলা বিএনপির সদ্যবিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) ও জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলীম এবং বিকেলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু সই করা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলীম সই করা পত্রের তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন জেলা সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য ভিপি শামীম খান, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর ও আফসার আলী।
অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু সই করা পত্রের তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ভিপি অমর কৃষ্ণ দাস, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুন্সি জাহেদ আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ সুইট।
ওইপত্রে বলা হয়, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান টুটুলকে নিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা জেলা সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ অবস্থায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে কেন আমিনুর রহমান টুটুলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সঠিক তদন্ত করে জেলা সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির দপ্তরে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
আরও পড়ুন: চাঁদা না পেয়ে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকার মাছ লুটের অভিযোগএর আগে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের মাছ ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৫ জুলাই) ‘চাঁদা না পেয়ে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকার মাছ লুটের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে জাগো নিউজ।
এতে বলা হয়, নিমগাছী সমাজভিত্তিক মৎস্যচাষ প্রকল্পের আওতাধীন তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর সংঘই পাড়া গ্রামের ৩২ বিঘা ‘সংঘই দিঘী পুকুর’ সুফলভোগীদের কাছ থেকে সাব-লিজ নেন আব্দুস সালাম। যার মেয়াদ রয়েছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। কিন্তু সম্প্রতি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান টুটুল তার লোক দিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মাছ চাষ করতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। পরে সুফলভোগী ও স্থানীয়দের বিষয়টি জানালেও কোনো সমাধান মেলেনি।
১৭ জুলাই ভোর ৫টার দিকে পূর্বপরিকল্পিত ও বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে পুকুরে জাল ফেলে মাছ লুট করেন অভিযুক্ত। এতে পুকুরের পাহারাদার আব্দুল খালেক ও স্থানীয় শহিদুল ইসলাম বাধা দিলে তাদের মারধর, গুম ও খুনের হুমকি দেওয়া হয়। পরে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ সুযোগে সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে আবারও জাল ফেলে মাছ লুট করেন তারা। এভাবে দুই দফায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ লুট করা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুস সালাম গত ১৮ জুলাই তাড়াশ থানা ও ২৩ জুলাই জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। একইসঙ্গে পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নিমগাছী আর্মি ক্যাম্পে অনুলিপি পাঠান।
এম এ মালেক/এসআর/এএসএম