গত কয়েকদিন ধরে একনাগারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে পাহাড়ি অঞ্চলে। এ কারণে হঠাৎ করে খরস্রোতা নদী তিস্তা ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। এরই মধ্যে তিস্তার দোমহনি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। একই সঙ্গে সংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা।
তিস্তা নদীর পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়ি ,বাসুসুবা অঞ্চলের কেরানি পাড়া এবং ক্রান্তি ব্লকের একাংশ। শতাধিক বাড়ি-ঘর তিস্তার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বাড়ছে ভয়-আতঙ্ক। তিস্তার পানি বাড়িতে ঢুকে যাওয়ার কারণে সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক তিস্তার পানির নিচে থাকায় যান চলাচল বন্ধ আছে। সব গাড়ি ঘুরিয়ে দার্জিলিং ও সিকিমে যাচ্ছে।
তিস্তায় পানির চাপ বাড়ায় গাজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় তিন হাজার কিউসেকের বেশি পানি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে সেচ দপ্তর। ফলেই পরিস্থিতি একেবারে যেন হাতের বাইরে যেতে শুরু করেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে তিস্তা পাড়ের মানুষদের উদ্দেশ্যে। তারা যেন ত্রাণ শিবিরে গিয়ে আশ্রয় নেয়। অনেকেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। কেউ আবার ভেলা বানিয়ে খুঁজছেন নিরাপদ আশ্রয়।
এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নির্দেশে বন্যা কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে যান জলপাইগুড়ির জেলা প্রশাসন। পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুমুদ রঞ্জন রায় জানান, তিস্তার পানি বাড়লেই তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন। আমরা তাদের পাশে সব সময় দাঁড়াই। এবারও পাহাড়ে বেশি বৃষ্টির কারণে তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রচুর পানি ছেড়েছে। তাই বানভাসি হয়েছে মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এসেছে। আমরা ওইসব এলাকায় থাকা দূর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। কলকাতা আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ফলে তিস্তার আরও ভয়ানক রূপ দেখা যেতে পারে।
ডিডি/টিটিএন