রাজনীতি

চাঁদাবাজদের তালিকা প্রকাশের দাবি ফারুকের

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছেন, চাঁদাবাজদের ধরেছেন ভালো কথা, কিন্তু ২ হাজার কোটি টাকা চাঁদা নেওয়ার খবর নাকি আপনাদের কাছে আছে। তাদের নাম প্রকাশ করুন। গত ১১ মাসে কে কী করেছে তা প্রকাশ করুন।

বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় আসার ১১ মাস পার হলেও এখনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি, যা জনগণের প্রত্যাশার পরিপন্থি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বুধবার (৩০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, দেশের প্রতিটি গ্রামগঞ্জ, চায়ের দোকান, মহল্লায় এখন একটি প্রশ্ন- আপনারা তো কারও পক্ষের লোক না, তাহলে কেন এখনো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হচ্ছে না? বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ মাত্র তিন মাসের মাথায় এরশাদের ১০ বছরের দমন-নিপীড়নের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচন দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ ১১ মাসেও নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে!

তিনি বলেন, আমরা তো রাজনৈতিক পরিবার থেকে এসেছি। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। আমাদের নেত্রী এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। স্বাধীনতার ঘোষকের সন্তান ১৬ বছর দেশের বাইরে থেকে গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছেন। এই আমাদের তরুণ প্রজন্মের নেতাদের দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম ত্বরান্বিত করে আপনাদের সহায়তা করে হাসিনাকে বিদায় করেছেন। সেই বিদায়ের ফল কি আজ ১১ মাসে আমরা পেয়েছি?

আরও পড়ুন আমরা ফ্যাসিস্টদের দোসর না: জাতীয় পার্টি সমাবেশের স্থান সরিয়ে রাকিব বললেন ‘কাঁটার পরিবর্তে ফুল দিলাম’

বিএনপির এ নেতা বলেন, জামায়াতে ইসলামের বন্ধুরা, আপনারা কোনো এক সময় আমাদের বন্ধুও ছিলেন। অবহেলা করি না, করতেও চাই না। কিন্তু মনে দুঃখ হয় যখন দিল্লির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, সে লড়াইও আপনারা এক সময় আমাদের বন্ধু ছিলেন। কিন্তু ঠিক যেই মুহূর্তে বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথাবার্তায়, তার আন্দোলন সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ একটি নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য প্রস্তুত, ঠিক সেই মুহূর্তে কিছু রাজনৈতিক দল নানান অজুহাত দিচ্ছে। কখনো বলছে পিআর, কখনো বলছে সংবিধান সংশোধন না হলে নির্বাচনে যাবে না। এসব অজুহাত জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি কোনো অন্যায়ের পক্ষপাতী নয়। আমাদের কর্মীরা যদি ভুল করে, তারেক রহমান নিজে ব্যবস্থা নিয়েছেন, বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন। তারপরও আমাদের বদনাম দেওয়া হচ্ছে। অথচ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। আমাদের কর্মীরা রিকশা চালিয়ে বেঁচে আছে, তবু গণতন্ত্রের আন্দোলনে আস্থা রেখেছে।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, আমরা আর হাসিনার দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় যেতে চাই না, সরকার গঠন করতে চাই না। আমরা চাই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জনগণের কাছে যাক। আমরা চুরির মাধ্যমে, ভোট ডাকাতির মাধ্যমে সরকার গঠন করতে চাই না। দয়া করে কারও কান কথা শুনে লাভ নেই। জনগণ সব বোঝে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠন হলে বাংলাদেশ আবারও গণতন্ত্রের পথে ফিরবে। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের নাম ইতিহাসে ইতিবাচকভাবে লেখা থাকবে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ডাক্তার এম ইসলাম বাদল তালুকদার। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, লায়ন সোলায়মান তালুকদার, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

কেএইচ/কেএসআর/এএসএম