ক্যাম্পাস

আব্বা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন, আমাদের কোনো আফসোস নেই

জুলাইয়ের শহীদ ইউসুফের কন্যা সীমা খাতুন বলেছেন, ‘আমার আব্বা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। এতে আমাদের কোনো আফসোস নেই। আব্বা বৃদ্ধ মানুষ হলেও আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন।’

রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর ১টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ছাত্র-শিক্ষক সংহতি দিবসে মতবিনিময় ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা কেউ ঘরে বসে থাকতে পারিনি। আগস্টে আমার ভাইদের ডাকে আমিও পথে নেমেছিলাম। আমরা গ্লাসে করে পানি খাইয়েছি, বিস্কুট দিয়েছি, কখনো কখনো লাঠি হাতে তুলে দিয়েছি। তারপরও আমরা আন্দোলনের শরিক ছিলাম।’

বাবা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট সকালে আমার আব্বা বাজার করে বাসায় ফিরেছিলেন। ঠিক সেই সময় আমাদের গলিতে পুলিশ প্রবেশ করে। তারা গুলি চালায়, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে, এমনকি ছোট ছোট বাচ্চাদের গায়েও রাবার বুলেট ছোঁড়ে।’

তিনি বলেন, ‘সেদিন আমি সকাল থেকে আন্দোলনে ছিলাম। দুপুর ২টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে খবর পাই যে আমার আব্বা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার শিশু সন্তানকে সঙ্গে করে আন্দোলনের মাঠ থেকে দৌড়ে হাসপাতালে যাই। গিয়ে দেখি তিনটি মরদেহ ঢাকা রয়েছে। প্রথমে চিনতে পারিনি। পরে আমার আব্বার পা দেখে শনাক্ত করি। সেই অবস্থায় আমি নিজে মরদেহ নিয়ে আসি। আমার গর্ব হয় আব্বা দেশের জন্য শহিদ হয়েছেন।’

অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামানের সভাপতিত্বে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ১৭ শহীদ পরিবার ও আন্দোলনে আটক হওয়া ৩১ শিক্ষার্থীকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এসময় তারা বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

ইরফান উল্লাহ/আরএইচ/জিকেএস