তামিম ইকবালের কথা মনে আছে? ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলের প্রয়োজনে ভাঙা হাত নিয়েই ব্যাটিংয়ে নেমে পড়েছিলেন তামিম। তার সেই বীরত্বের কথা এখনও মনে গেঁথে রয়েছে ভক্ত-সমর্থকদের। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ পেয়েছিল দুর্দান্ত এক জয়।
দলের প্রয়োজনে আজ (সোমবার) ঠিক তামিমের মতোই ঝুঁকি নিয়ে মাঠে নামলেন ক্রিস ওকস। ইংল্যান্ডের দরকার ১৭ রান, হাতে মাত্র ১ উইকেট। কাঁধে মারাত্মক চোট পাওয়া ওকস যখন মাঠে নামেন, দেখা যায় তার একটি হাত তার জার্সির ভেতরে গুটানো। এমন দৃশ্য দেখে কেঁদেছেন ইংল্যান্ডের সমর্থকরা।
তবে ওকসের সেই চেষ্টা আর বীরত্ব শেষ পর্যন্ত গেছে বিফলে। তীরে এসে তরি ডুবেছে ইংল্যান্ডের। অপরপ্রান্তে থাকা গুস এটকিনসন ননস্ট্রাইক ওকসকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। তাকে বোল্ড করে মোহাম্মদ সিরাজ ভেঙেছেন স্বপ্ন। ইংল্যান্ড হেরেছে ৬ রানে।
দলের প্রয়োজনে এক হাতে ব্যাট করতে নেমে যাওয়ার এমন দৃষ্টান্ত ক্রিকেটে আছে আরও। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেগুলো-ম্যালকম মার্শাল, ১৯৮৪, হেডিংলিইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টের প্রথম দিনে ইংল্যান্ডের ক্রিস ব্রডের ব্যাট থেকে ছুটে আসা একটি বল ঠেকাতে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ম্যালকম মার্শালের বাঁ হাতের বুড়ো আঙ্গুলে দুটি চিড় ধরে।
যদিও তিনি ডানহাতি বোলার ছিলেন, চিকিৎসকরা তাকে পরামর্শ দেন যাতে তিনি এই টেস্ট তো বটেই; আরো ১০ দিন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকেন। তৃতীয় দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ল্যারি গোমেজ যখন একাই লড়ছিলেন, তখন সফরকারীদের ৯ উইকেটের পতন ঘটে। ৯৬ রানে অপরাজিত ছিলেন গোমেজ। গোমেজ প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা শুরু করলে মার্শাল ব্যাট হাতে মাঠে নেমে সবাইকে অবাক করে দেন। ব্যাট করেছিলেন এক হাতে। পরে মার্শাল জানান, গোমেজের সেঞ্চুরির জন্যই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন।
সেলিম মালিক, ১৯৮৬, ফয়সালাবাদসেলিম মালিকের অবস্থা ছিল অনেকটা ওকসের মতোই। বাঁ হাত প্লাস্টার করে স্লিংয়ে ঝোলানো ছিল তার। ১৯৮৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফয়সালাবাদ টেস্টে প্লাস্টার করা হাত নিয়েই ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন পাকিস্তানের ব্যাটার। এমনিতে ডানহাতি ব্যাটার হলেও সেদিন বাঁহাতি ব্যাটার হয়ে এক হাতে খেলেছিলেন তিনি ১৪টি ডেলিভারি!
গ্রায়েম স্মিথ, ২০০৯, সিডনিগ্রায়েম স্মিথ ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনিতে একটি টেস্ট ম্যাচ বাঁচাতে ভাঙা হাত নিয়ে মাঠে নামেন। ৮ ওভার ২ বল বাকি ছিল তখন ম্যাচের। স্মিথ মিচেল জনসন, ডগ বলিঞ্জারের একের পর এক বল ঠেকিয়ে যাচ্ছিলেন এক হাতে ভর করে।
তবে ঠিক ১০ বল বাকি থাকতে মিচেল জনসনের একটি বল ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ বাঁচাতে না পারলেও স্মিথের এই ইনিংস বহুদিন ক্রিকেট ভক্তরা মনে রেখেছেন।
এমএমআর/জেআইএম