‘৩৬ জুলাই’ (৫ আগস্ট) স্বৈরাচার পতনের ঐতিহাসিক দিন। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে হাজারো মানুষের ঢল। কেউ এসেছেন পতাকা হাতে, কেউ বা শিশুদের নিয়ে স্মরণ করছেন গণঅভ্যুত্থানের গৌরবগাথা। আর এই বিশাল জনসমাগম ঘিরে জমজমাট হয়ে উঠেছে পথঘাট, জমে উঠেছে অস্থায়ী হকারদের কেনাবেচা।
পেয়ারা ভর্তা, আম ভর্তা, ঝালমুড়ি, বাদাম, পেঁয়াজু, সিঙারা, নুডলস, ছোলা—নানা পদের পথখাবার নিয়ে হাজির হয়েছেন হকাররা। সঙ্গে রয়েছে ফাস্টফুড আইটেম- শরবত, লেবুর পানি, আখের রস, সোডা পানিসহ হরেক রকম পানীয়। ভোজনপ্রেমীদের ভিড়ে যেন মেলা বসেছে রাজপথে।
সকাল থেকে অনুষ্ঠানস্থলে আসা হাজারো মানুষের ক্ষুধা মেটাতে খাবারের দোকানগুলোতে দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়। অনেকে বলছেন, খাবারগুলো শুধু পেট ভরানোর উপায় নয় বরং উৎসবমুখর পরিবেশের অংশ।
দাম নেই বাড়তি, লাভ আছে বিক্রির পরিমাণেহকারদের অনেকেই জানালেন, আজকের দিনটি ঘিরে তারা বাড়তি পণ্য এনেছেন, তবে দাম বাড়াননি।
আখের রস বিক্রেতা রায়হান বলেন, ‘প্রতি গ্লাস ২০ টাকা নিচ্ছি, যেমন অন্যদিনে নেই। বরফ ছাড়া রস দিচ্ছি, কারণ বৃষ্টির মধ্যে বরফ রাখা কঠিন। বিক্রি খারাপ না, আশা করি সব বিক্রি হয়ে যাবে।’
পানি বিক্রেতা রবিউল বলেন, ‘বোতলজাত পানি ২০ টাকায় বিক্রি করছি। কোনো সময়েই দাম বাড়াই না। আজ বেশি মানুষ তাই বিক্রি বেশি, লাভও ভালো।’
বাদাম বিক্রেতা আনোয়ার বলেন, ‘৪০ টাকায় বিক্রি করছি, আগেও এই দামেই বিক্রি করেছি। এখনো বিক্রি গরম হয়নি, তবে দুপুরের পর বেচাকেনা জমবে—এই আশায় বসে আছি।’
ছোলা বিক্রেতা সাঈদ বলেন, ‘সকালটা তুলনামূলক ধীর ছিল। তবে ১২টার পর বিক্রি বেড়েছে। ক্ষুধার্ত মানুষ ছোলা খেয়ে ক্ষুধা মেটাচ্ছেন। আজ বেশ কিছু মাল এনেছি, বিক্রি হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।’
৩৬ জুলাইয়ের এই সমাবেশ ঘিরে সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। রাজপথের একপাশে চলছে দেশব্যাপী আন্দোলনের স্মরণ, অন্যপাশে ক্ষুধা মেটাতে ছোট ছোট অস্থায়ী দোকান। কেউ বাদাম খাচ্ছেন, কেউ ঠান্ডা শরবতের স্বাদ নিচ্ছেন—তাদের চোখে-মুখে বিজয়ের আনন্দ।
হকারদের ভাষায়, আজকের মতো দিনে দাম বাড়ানোর প্রলোভনে তারা যান না। কারণ, বিক্রির পরিমাণই হয়ে ওঠে লাভের উৎস।
‘জয় উৎসবের, জয় স্মৃতির, আর আজ একটু করে জয় হকারদেরও’, বললেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা আলম।
ইএআর/বিএ/জেআইএম