জাতীয়

জুলাইয়ে সড়কে ঝরেছে ৪১৮ প্রাণ, বেশি নিহত মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়

চলতি বছরের জুলাই মাসে দেশে ৪৪৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪১৮ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮৫৬ জন। সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন মোটরসাইকেল ও থ্রি–হুইলার যানের দুর্ঘটনায়। ১৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০৯ জন, যা মোট নিহতের ২৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। মোট দুর্ঘটনার সংখ্যা বিবেচনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ২৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পাঠানো প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জুলাইয়ে চারটি নৌ দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ২১টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৭২ জন, শিশুর সংখ্যা ৫৩। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০৯ জন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ও থ্রি–হুইলার দুর্ঘটনায় ১০৮ জন মারা গেছেন। এছাড়া বাসযাত্রী ৪১ জন ও ট্রাক–পিকআপ আরোহী ৩০ জন নিহত হয়েছেন। পথচারী নিহত হয়েছেন ৯২ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৭ জন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ী ১৩ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে জুলাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

আরও পড়ুন পদ্মার পানিতে ডুবছে চরের ১৪০০ হেক্টর জমির ফসল, দিশাহারা কৃষক এবার এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চেয়েছে দুদক

সংস্থাটি বলছে, এসব দুর্ঘটনার প্রায় ৪৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে ও প্রায় ৩৪ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে ঘটেছে। দুর্ঘটনার ধরন সম্পর্কে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৪৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এছাড়া মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ১৮ দশমিক ২৮ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জুলাইয়ে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে সকালে, ২৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এছাড়া দুপুরে ঘটেছে প্রায় ২২ শতাংশ। বিভাগ হিসেবে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি হয়েছে বরিশাল বিভাগে। জেলা হিসেবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ও জয়পুরহাটে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সময় রাজধানীতে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলেছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও সড়ক, বেপরোয়া গতি ও চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক–মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে ধীরগতির যান চলাচল, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। বেসরকারি এ সংস্থাটি বলছে, দুর্ঘটনা রোধে দক্ষ চালক তৈরি, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়ানো, ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ, মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন বন্ধ করা, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়কপথের ওপর চাপ কমাতে হবে।

এফএইচ/কেএসআর/এএসএম