একটি বিয়ের সম্পর্ক মানে ভালোবাসার সঙ্গে আস্থা, বিশ্বাস আর একে অপরের প্রতি সম্মান। কিন্তু কখনো কখনো সেই বিশ্বাসে ফাটল ধরতে পারে। হঠাৎ করে মনে হতে পারে, প্রিয় মানুষটি কি সত্যিই সৎ?
প্রতারণার সন্দেহ সধারণত প্রথমে মনের ভেতরেই জন্মায়। হয়তো এমনিতে চোখে পড়ে না এমন কোনো আচরণেই হঠাৎ আপনার মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করবে। কিন্তু বিষয়টি আসলে হঠাৎ না। গবেষণা বলছে — নির্দিষ্ট কিছু আচরণে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, সঙ্গী পরকীয়ায় জড়িয়েছেন কি না।
১. আচরণ বা অভ্যাসের পরিবর্তনমনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, আচরণ ও অভ্যাসের ছোট ছোট পরিবর্তনই সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ হতে পারে। যেমন, আপনার সঙ্গী হয়তো আগে সবসময় মোবাইল ফোনের লক খোলা রাখতেন, কিন্তু হঠাৎ একদিন পাসওয়ার্ড বদলে ফেললেন বা বারবার ফোন লুকিয়ে রাখতে শুরু করলেন। কিংবা হঠাৎ করে কাজের ব্যস্ততার অজুহাতে বাড়ি ফেরায় দেরি হতে লাগল। এধরনের আচরণ সঙ্গীর মনে প্রশ্ন তৈরি করে।
২. মানসিক অস্থিরতাগবেষণা বলছে, যারা লুকিয়ে একাধিক সম্পর্ক চালান, তারা আচরণগত দিক দিয়ে অস্থির হয়ে ওঠেন। একদিকে অযথা ঝগড়া করা, আবার অন্যদিকে অকারণে অতিরিক্ত যত্ন দেখানো — দুটোই পরকীয়ার আভাস হতে পারে।
শুধু মানসিক পরিবর্তন নয়, শারীরিক ভাষাও অনেক সময় সত্য উন্মোচন করে দিতে পারে। চোখে চোখ পড়লে এড়িয়ে যাওয়া, হঠাৎ করে চেহারায় বাড়তি যত্ন নেওয়া, নতুন ধরনের পোশাক বা সুগন্ধি ব্যবহার শুরু করা — এসবও লুকানো সম্পর্কের আভাস দিতে পারে।
তবে লক্ষণ খুঁজতে গিয়ে সাবধান থাকবেন। কারণ এসব লক্ষণ থাকলেই যে সঙ্গী পরকীয়া করছেন, এমন নয়। আরও নানান কারণে এসব পরিবর্তন আসতে পারে একজন মানুষের মধ্যে। তাই শুধু সন্দেহের পাল্লায় পড়ে একটি সম্পর্ক নষ্ট হতে দেবেন না।
সম্পর্কে মনোমালিন্য, কাজের চাপ কিংবা মানসিক অবসাদ থেকেও একই ধরনের আচরণ আসতে পারে। তাই সন্দেহ জন্মালেই মুখোমুখি খোলামেলা আলোচনা সবচেয়ে জরুরি। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, সত্যিকার আস্থার জায়গা তৈরি করতে চাইলে শুরুতেই রাগ বা অভিযোগ না করে, বরং কৌতূহল ও যত্ন নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।
সূত্র: আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, জার্নাল অব সোশ্যাল অ্যান্ড পার্সোনাল রিলেশনশিপস, সায়েন্টিফিক আমেরিকান
এএমপি/জিকেএস