আসামে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আবারও কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে গুয়াহাটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এবার থেকে কেবল সীমান্তে ধরা পড়া লোকজনকে ফেরত পাঠিয়েই দায়িত্ব শেষ করা হবে না। ১৯৭১ সালের পর থেকে যারা অবৈধভাবে আসামে বসবাস করছেন, তাদেরও চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানো হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আইন আমাদের হাতে সে ক্ষমতা দিয়েছে ও আমরা তা কার্যকর করছি। গত এক বছরে চার শতাধিক অনুপ্রবেশকারীকে সীমান্তে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বেশি।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সাফ জানিয়ে দেন, প্রক্রিয়া চলছে ও এটি থামবে না। বরং আমরা এই অভিযান বাড়াব। এরই মধ্যে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে ও রাজ্যের অভ্যন্তরীণ জেলাগুলোতেও তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ইমিগ্র্যান্ট এক্সপালশন অ্যাক্টের আওতায় আমরা ১৯৭১ সালের পরে আসামে প্রবেশ করা যে কোনো বিদেশিকে পুশব্যাক করার ক্ষমতা রাখি। সেই ক্ষমতা ব্যবহার করেই আমরা রাজ্যের ভেতরে বসবাসরত অবৈধ বিদেশি ও নতুন প্রবেশকারীদের উভয়কেই ফেরত পাঠাচ্ছি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য আসামের দীর্ঘদিনের অনুপ্রবেশ বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। রাজনৈতিক মহল বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর এই নতুন ঘোষণা বিতর্ককে আরও ঘনীভূত করবে। বিশেষ করে এনআরসি প্রক্রিয়ার পর বহু মানুষ নিজেদের নাগরিক তালিকা থেকে বাইরে দেখতে পেয়েছেন, যাদের অনেকেই এই ঘোষণার পর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আসামের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশের প্রশ্নটি সব সময়ই ভোটের বড় হাতিয়ার। মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য তাই শুধু প্রশাসনিক বার্তা নয়, রাজনৈতিক ইঙ্গিতও বহন করছে। তাঁরা বলছেন, তিনি এই মুহূর্তে রাজ্যজুড়ে তার দলীয় অবস্থানকে মজবুত করতেই এমন বার্তা দিতে চাইছেন।
যাদের অবৈধ বলা হচ্ছে, তাদের একাংশ এই ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় এক সংগঠনের কর্মী বলেন, আমাদের পরিবার এখানে বহু বছর ধরে বসবাস করছে। হঠাৎ করে আমাদের অবৈধ বলা হচ্ছে। কাগজপত্র নেই বললেই তো আমরা বাইরের মানুষ হয়ে গেলাম না।
মানবাধিকারকর্মীরাও বলছেন, এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের ভয়ের কারণ হতে পারে। আবার রাজ্যের বিরোধী দল বলছে, এ ধরনের ঘোষণা সাধারণত নির্বাচনের আগে জনমত টানার জন্যই বেশি করে দেওয়া হয়। তবে রাজ্য সরকার বলছে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ