খেলাধুলা

টানা তিনবার দ্য হান্ড্রেডে চ্যাম্পিয়ন ওভাল ইনভিন্সিবল

ইংল্যান্ডের হান্ড্রেডসে টানা তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো ওভাল ইনভিনসিবল। ট্রেন্ট রকেটসকে ২৬ রানে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করলো স্যাম বিলিংসের দল।

লর্ডসে অনুষ্ঠিত হান্ড্রেড মেন্স-এর ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ১০০ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান সংগ্রহ করে ওভাল ইনভিন্সিবল। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রানে থেমে যায় ট্রেন্ট রকেটস।

হান্ড্রেডের ইতিহাসে যেন এ এক অটল সমীকরণ হয়ে উঠেছে: মৃত্যু, ট্যাক্স আর ওভাল ইনভিন্সিবলসের শিরোপা জয়! টানা তিন মৌসুম ধরে গ্রুপপর্বে শীর্ষে থেকে সরাসরি লর্ডস ফাইনালে খেলা এবং প্রতিবারই ট্রফি হাতে তোলা- এবারও এর ব্যতিক্রম হলো না ইনভিন্সিবলের জন্য।

ফাইনালে ট্রেন্ট রকেটসকে একেবারে উড়িয়ে দিয়ে জিতেছে স্যাম বিলিংসের দল। প্রথম থেকেই ব্যাট হাতে দাপট দেখান উইল জ্যাকস ও জর্ডান কক্স। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে এই দুজন ৫৫ বলে ৮৭ রানের জুটি গড়ে ১৬৮ রানের ভিত গড়ে দেন। পরে লেগ স্পিনার নাথান সাউটার প্রথম ৭ বলে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে রকেটসের রান তাড়াকে থামিয়ে দেন।

ম্যাচে সাউটারই ছিলেন আসল নায়ক। একসময় রকেটসের স্কোর ছিল ৩০ বলে ৩৫ রান, হাতে সব উইকেট। কিন্তু মাত্র ১০ বলের মধ্যে তারা ৩ উইকেট হারায়। জো রুটকে লং-অনে ক্যাচ করান সাউটার, রেহান আহমেদকে করেন এলবিডব্লিউ, আর টম বেন্টনকে ফেরান লং-অফে। পরে দারুণ এক ক্যাচ নিয়েও আলোচনায় ছিলেন এই লেগ স্পিনার।

অস্ট্রেলিয়া থেকে ফাইনাল খেলার জন্য উড়ে আসা অ্যাডাম জাম্পাও ভালো বোলিং করেছেন (১/২১), তবে আলো কেড়ে নিয়েছেন তার সঙ্গী সাউটার।

ফাইনালের প্রথম বলেই চার মেরে নিজের আগ্রাসী মেজাজের জানান দেন জ্যাকস। তিনি হয়ে যান ইনভিন্সিবলসের হয়ে এক হাজার রানের মালিক প্রথম ব্যাটার। অন্য প্রান্তে কক্সও খেলেন ঝোড়ো ইনিংস। রেহান আহমেদের বিপক্ষে দুজনই ছক্কা হাঁকান। শেষ পর্যন্ত জ্যাকস ৪১ বলে ৭২ রানে আউট হলেও ততক্ষণে ম্যাচ বেরিয়ে গেছে রকেটসের নাগালের বাইরে।

ফাইনালে নামার আগে থেকেই ইনজুরিতে ভুগছিল ট্রেন্ট রকেটস। টম আলসপ, ম্যাক্স হোল্ডেন, অ্যাডাম হোস আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন। ফাইনালের আগে একদিনে আরও দুই পেসারকে হারায় তারা— স্যাম কুক (আঙুল ভাঙা) ও লকি ফার্গুসন (হ্যামস্ট্রিং চোট)।

জরুরি অবস্থায় ডাকা হয় ডিলন পেনিংটনকে, যিনি প্রথম বলেই উইকেট নেন। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি রকেটসের। জর্জ লিন্ডে ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেয়ে বোলিং সম্পূর্ণ করতে পারেননি।

মার্কাস স্টয়নিসের ৩৮ বলে ৬৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস রকেটসকে লড়াইয়ে রাখলেও জয় আসেনি। শেষ ওভারে তাদের দরকার ছিল ২৭ রান—যা কার্যত অসম্ভব। শেষ বলে স্টয়নিসকে এলবিডব্লিউ করে ইনভিন্সিবলস নিশ্চিত করে টানা তৃতীয় শিরোপা।

মাত্র পাঁচ মৌসুমের টুর্নামেন্টে ইনভিন্সিবলস এখন এক কথায় জয়ের যন্ত্র। শেষ তিন মৌসুমে তাদের রেকর্ড- ২১ জয়, ১ টাই, মাত্র ৫ হার। অনিশ্চয়তার খেলা টি-টোয়েন্টির সংক্ষিপ্ত সংস্করণে এমন ধারাবাহিকতা সত্যিই অবিশ্বাস্য।

তবে এত সাফল্য হয়তো তাদের জন্যই সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আগামী মৌসুমে আসছে স্কোয়াড ‘রিসেট’— আইপিএলের মেগা অকশনের ধাঁচে নতুন করে দল গঠনের নিয়ম। ফলে বর্তমান দলটি ভেঙে যাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

তবুও আপাতত একটাই সত্য—ওভাল ইনভিন্সিবলস আবারও প্রমাণ করেছে, হান্ড্রেড মানেই তাদের শিরোপা উৎসব।

আইএইচএস/