ময়মনসিংহে ছয় দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেও উত্তপ্ত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। আন্দোলনের অংশ হিসেবে বাকৃবির ট্রেজারি ভবন ও ব্যাংকে তালা লাগিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে ট্রেজারি ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ আগে বাকৃবিতে অবস্থিত পূবালী ব্যাংকেও তালা লাগানো হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে প্রথমে পূবালী ব্যাংকের সামনে যান। এসময় কর্মকর্তাদের বের হতে বলা হয়। তাদের কথামতো সবাই ব্যাংক থেকে বের হলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর ট্রেজারি ভবন থেকেও সবাইকে বাইরে আসার সুযোগ দেওয়া হয়। সবাই বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তালা ঝোলানো হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের সব দাবি যৌক্তিক। কিন্তু দাবি আদায়ের কোনো লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে আমরা কঠোর আন্দোলনের দিকে যাচ্ছি। দাবি আদায় না হলে, শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীরা যে দাবি করছেন শিক্ষকরা বহিরাগতদের দিয়ে তাদের ওপর হামলা করেছেন, এটি সম্পূর্ণ ভুল কথা। আমরা বাইরের কাউকে ক্যাম্পাসে আসতে বলিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো- ১. অবৈধভাবে হল ভ্যাকেন্টের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে আদেশ তুলে নিতে হবে। ২. হলগুলোতে চলমান সব ধরনের সুবিধা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। ৩. এই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর শিক্ষকদের মদদে বহিরাগত দিয়ে হামলার দায়ে প্রক্টোরিয়াল বডিকে পদত্যাগ করতে হবে। ৪. বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দ্বারা ককটেল বিস্ফোরণ, লাইব্রেরি ও স্থাপনা ভাঙচুর এবং দেশীয় অস্ত্র দ্বারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তার ঘটনার জন্য উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ৫. হামলার সঙ্গে জড়িত শিক্ষকবৃন্দ: কৃষি অনুষদের আসাদুজ্জামান সরকার, তোফাজ্জল, শরীফ আর রাফি, কামরুজ্জামান, পশুপালন অনুষদের বজলুর রহমান মোল্যা, জেনেটিক্সের মুনির, ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের আশিকুর রহমান এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৬. গত ১ মাস ধরে চলমান তারা যে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে, সেই একক ডিগ্রি অবিলম্বে প্রদান করতে হবে। তিনটি ভিন্ন ডিগ্রি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এফএ/এএসএম