দেশজুড়ে

দুই সন্তানের বাবাকে শিশু দেখিয়ে জামিন, আইনজীবীর নামে মামলা

গাইবান্ধায় আলোচিত হ্যাকার চক্রের হোতা পলাশ রানাকে (২৫) জাল জন্মনিবন্ধন তৈরি করে শিশু হিসেবে দেখিয়ে জামিন নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেফাউল ইসলাম রিপনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) জেলা শিশু আদালতের বিচারক পেশকারকে মামলার নির্দেশ দেন। এদিন বিকেলে আদালতের পেশকার সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় অভিযোগ জমা দেন।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম তালুকদার বলেন, লিখিত এজাহার হাতে পেয়েছি। তবে কিছু সংশোধন ও বিয়োজনের জন্য বাদীকে বলা হয়েছে। সেটি হাতে পেলেই মামলা এন্ট্রি করা হবে।

এ বিষয়ে পেশকার সালাহউদ্দিন বলেন, আদালতের নির্দেশে বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি। অভিযোগটি থানায় মামলা হিসেবে রুজু করার প্রক্রিয়া চলছে।

তবে অভিযুক্ত আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলা হলে সেটি আদালতে মোকাবিলা করব।

আরও পড়ুন:দুই সন্তানের জনককে শিশু দেখিয়ে জামিন

এর আগে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবু বকর সিদ্দিক ছানা বলেন, আদালতের নির্দেশে ওই জামিন বাতিল করা হয়েছে ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

গত ১৫ জুলাই ভোরে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে গোবিন্দগঞ্জের তালুককানুপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে হ্যাকার চক্রের হোতা পলাশ রানা ও সহযোগী সুমন মিয়া, সাইদুল ইসলাম ও আবু সাইদ লিটনকে আটক করা হয়। এসময় বিপুল সিম, মোবাইল ও প্রযুক্তি ডিভাইস উদ্ধার হয়। সরকারি ভাতা হ্যাক করে লাখো টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২০ জুলাই আমলি আদালতে জামিন ব্যর্থ হলে ২৭ জুলাই দায়রা জজ আদালতে মিস কেস করেন আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপন। কিন্তু মামলাটির তথ্য গোপন রেখে তিনি ৩ আগস্ট শিশু আদালতে পলাশকে ১৭ বছর ৭ মাস বয়সী দেখিয়ে ভুয়া জন্মনিবন্ধন দিয়ে জামিন আদায় করেন। আদালত তা মঞ্জুর করলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

১২ আগস্ট দায়রা জজ আদালতে এ জালিয়াতির তথ্য উপস্থাপন করেন আইনজীবী সরওয়ার হোসেন বাবুল। তিনি জানান, ৪ আগস্ট ইস্যুকৃত জন্মনিবন্ধনে জন্মতারিখ দেখানো হয় ১৫ জানুয়ারি ২০০৮, অথচ জাতীয় পরিচয়পত্রে তা ১ জুন ২০০০ (২৫ বছর ২ মাস)। মামলার এজাহারেও বয়স ২৫ বছর উল্লেখ রয়েছে।

আনোয়ার আল শামীম/এমএন/জেআইএম