নাটোর পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি পান করে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। এরমধ্যে ১২৮ জনকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ক্রমাগত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নাটোর সদর হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানকার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে উপচে পড়া ভিড়। চিকিৎসক, নার্স, রোগী, আত্মীয়-স্বজন এবং কৌতুহলী লোকজনের ভিড়ে উপচে পড়ছে হাসপাতাল।
আক্রান্ত রোগীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিক থেকে অনেকেই পেটে ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেন। এরপর পাতলা পায়খানা শুরু হলে অনেকেই রাতে এবং আজ সকাল থেকে হাসপাতালে আসতে শুরু করেন। ডায়রিয়ায় মূলত উত্তর পটুয়াপাড়া ঝাউতলা ও কাঠালবাড়ি এলাকার লোকজন আক্রান্ত হয়েছেন।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আকাশ নামে একজন জানান, গতকাল পৌরসভার সরবরাহ করা পানি পান করার পর থেকেই তার স্ত্রীর পেটে ব্যথা শুরু হয়। রাতে পরিস্থিতির অবনতি হলে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া বিভাগে ভর্তি করেন। এরপর তিনি দেখতে পান একের পর এক রোগী আসছে।
শহিদুল নামে অপর একজন জানান, তার শিশু সন্তানকে ডায়রিয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
রোগীদের স্বজনরা জানান, মূলত পৌরসভার সরবরাহ করা পানি পান করেই বেশিরভাগ মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সংবাদ পেয়ে নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহিন, পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসমা খাতুন, নাটোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. মুক্তাদির আরেফিন ডায়রিয়া ওয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন।
সিভিল সার্জন ডাক্তার মুক্তাদির আরেফিন বলেন, আমরা ধারণা করছি পানি পান করার ফলেই বেশিরভাগ নারী, শিশু ও পুরুষ ডায়েরিয়া আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলো মহাখালী আইসিডিডিআরবি গবেষণা কেন্দ্রে পাঠাচ্ছি। আমাদের পর্যাপ্ত স্যালাইন এবং ওই অন্যান্য ওষুধ রয়েছে। রোগীদের চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হবে না।
জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন নাটোর হাসপাতাল পরিদর্শন শেষ সাংবাদিকদের জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
অপরদিকে নাটোর পৌর প্রশাসক আসমা খাতুন জানান, ঘটনা জানার পর থেকেই আমাদের স্টাফ পৌরসভায় রয়েছে। তারা অতিরিক্ত স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করছে। পানি বিশুদ্ধকরণের পর ওই এলাকায় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কী কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে তা পৌরসভা খতিয়ে দেখছে।
রেজাউল করিম রেজা/এফএ/এমএস