দেশের প্রখ্যাত চিন্তাবিদ, প্রবীণ রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) শোকর্বাতা দেন দলটির দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান।
শোকবার্তায় জানানো হয়, বদরুদ্দীন উমর ছিলেন সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামে এক অবিচল যোদ্ধা ও অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তার লেখনী, চিন্তাধারা এবং অঙ্গীকার বাংলাদেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও গণমানুষের মুক্তির আন্দোলনে স্থায়ী অবদান রেখে যাবে।
এতে নেতারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ, আত্মীয়-স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রবীণ এই রাজনীতিক রাজধানীর শ্যামলী স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সকাল ১০টা ৫ মিনিটে মারা যান।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেনউল্লেখ্য, ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ভারতের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দীন উমর। তার পিতা আবুল হাশিম ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ, যিনি মুসলিম লীগের সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পারিবারিক পরিমণ্ডলেই তিনি রাজনীতি ও সমাজ বিশ্লেষণের বীজ বপন করেন, যা পরবর্তী সময়ে তার লেখনীতে প্রতিফলিত হয়।
ষাটের দশকে পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয় চেতনার উন্মেষ এবং বাঙালি সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার আন্দোলনে বদরুদ্দীন উমরের লেখা বইগুলো—বিশেষ করে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ (১৯৬৬), ‘সংস্কৃতির সংকট’ (১৯৬৭) এবং ‘সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা’ (১৯৬৯)—গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তার লেখায় ধর্ম ও রাজনীতির দ্বন্দ্ব, উপনিবেশিক উত্তরাধিকার এবং সাংস্কৃতিক বিভাজন নিয়ে তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ ফুটে উঠেছে।
সম্প্রতি, গত ২২ জুলাই শ্বাসকষ্ট ও নিম্ন রক্তচাপজনিত সমস্যায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। দীর্ঘ ১০ দিন চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফেরেন। বয়সের ভার ও শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তার বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান আজও প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ।
বদরুদ্দীন উমর শুধুই একজন লেখক নন, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তবুদ্ধির, ধর্মনিরপেক্ষতার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের এক অনন্য প্রবক্তা।
এনএইচআর/জিকেএস