সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপাল। ছাত্রজনতার অব্যাহত বিক্ষোভের মুখে এরই মধ্যে দেশটির রাজধানী কাঠমান্ডুর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে করাফিউ জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ পার্লামেন্ট ভবন প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলে পুলিশ জলকামান ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়।
এর আগে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে। এসময় তারা গাছের ডাল ও পানির বোতল ছুড়ে পুলিশের দিকে আক্রমণ চালায়।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে পৌঁছেছে। সিভিল হাসপাতাল ও ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচজন বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। এর আগে, দিনের শুরুতে সিভিল হাসপাতালে একজন মারা যান।
সিভিল হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন চন্দ্র রেগমি জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। তারা বাণেশ্বরের ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে বিক্ষোভ চলাকালীন আহত হন।
ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চারজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকের মাথা ও বুক গুলিবিদ্ধ ছিল। বর্তমানে আরও অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত বিক্ষোভকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মূলত নেপালে দুর্নীতি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে সোমবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে হাজারো তরুণ। গত শুক্রবার থেকে ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সসহ (সাবেক টুইটার) বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকার ২৬টি নিবন্ধিত নয় এমন প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকেই সাধারণ ব্যবহারকারীরা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন এবং তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
২৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থী যুবন রাজভান্ডারি বলেন, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার ঘটনায় রাস্তায় নেমেছি। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়। নেপালে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে, সেটার বিরুদ্ধেও আমরা প্রতিবাদ করছি।
২০ বছর বয়সী ইক্ষামা তুমরোক নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। আমরা পরিবর্তন চাই। আগের প্রজন্ম সহ্য করেছে, কিন্তু আমাদের প্রজন্মেই এর শেষ হওয়া উচিত।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট
এমএসএম