দেশের শেয়ারবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেশির ভাগ ভালো কোম্পানির দর কমেছে। সেই সঙ্গে অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম হ্রাস পেয়েছে। তবে ‘পচা’ বা ‘জেড’ স্তরের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভালো কোম্পানিগুলোর পতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার তালিকা বড় হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে প্রধান মূল্য সূচক। পাশাপাশি লেনদেন কিছুটা কমলেও তা ছিল ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ওপর। এর মাধ্যমে চলতি বছর দুইবার ১৪শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। সেই সঙ্গে বেড়েছে মূল্য সূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। কিন্তু শেষদিকে বিক্রির চাপ বাড়ায় বেশির ভাগ ভালো কোম্পানির দাম কমে যায়। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে প্রধান মূল্য সূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২৩টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা এর বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪৮টির কমেছে এবং ২০টির অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩১টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৪টির কমেছে এবং পাঁচটির অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ স্তরে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৩১টির এবং ২২টির অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র দুটির দাম বেড়েছে। অন্যদিকে ২৭টির কমেছে এবং সাতটির অপরিবর্তিত রয়েছে।
ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৬২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪১ কোটি ৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ওপর লেনদেন হলো।
এ লেনদেন বাড়াতে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে রবির শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার। ২৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এমজেএল বাংলাদেশ।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, লাভেলো আইসক্রিম, ই-জেনারেশন, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং ও ওরিয়ন ইনফিউশন।
আরেক শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৭টির দাম বেড়েছে, কমেছে ১১১টির ও ২৬টির অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এমএএস/একিউএফ/জিকেএস