আন্তর্জাতিক

গাজার ১০ শিশুকে জরুরি চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলো যুক্তরাজ্য

ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার গুরুতর অসুস্থ ও আহত ১০ শিশুকে জরুরি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে নিকট আত্মীয়রাও গেছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহে আরও কিছু অসুস্থ শিশুকে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ স্বাস্থ্য ও সমাজসেবা বিভাগ (ডিএইচএসসি) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডিএইচএসসি জানিয়েছে, এসব শিশু ব্রিটিশ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার (এনএইচএস) অধীনে চিকিৎসা পাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, তারা গাজা থেকে ১০ জন গুরুতর অসুস্থ শিশুকে যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরে সহায়তা করেছে। শিশুদের সঙ্গে ৫০ জন অভিভাবক বা আত্মীয়ও গেছেন।

ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, এসব শিশু ও তাদের পরিবার যাতে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা পায়, তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে আরও কিছু অসুস্থ শিশুকে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জানা যায়, গাজা থেকে আসা দুই শিশু ও তাদের পরিবার চিকিৎসার জন্য স্কটল্যান্ডে পৌঁছেছে।

এরই মধ্যে কিছু শিশু ‘প্রজেক্ট পিওর হোপ’ নামে একটি বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে এসে বিশেষায়িত চিকিৎসা পাচ্ছে। তারা ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে, শিশুদের সরিয়ে আনার সমন্বয় করতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স কাজ করছে। কর্মকর্তারা একে একটি ‘জটিল মানবিক অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব শিশু ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রথমে গাজা থেকে জর্ডানে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে ব্রিটিশ দূতাবাসের কর্মীরা সহায়তা দেন ও নিরাপত্তা যাচাই শেষে তাদের যুক্তরাজ্যে আনা হয়।

এই প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের ওপর চাপ দিচ্ছে যাতে গাজায় স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসা অবকাঠামোর সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়েস স্ট্রিটিং বলেন, গাজার শিশুদের ওপর যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক প্রভাব দেখে কেউই মর্মাহত না হয়ে থাকতে পারে না। তাদের পরিবার যে ভয় ও যন্ত্রণা সহ্য করেছে, তা অকল্পনীয়। এটি আত্মাকে ভেঙে দেওয়া পরিস্থিতি, যা আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক শিশুরই সুস্থ হওয়ার, খেলার এবং স্বপ্ন দেখার অধিকার রয়েছে। এই ছোট রোগীরা এমন সব বিভীষিকা দেখেছে, যা কোনো শিশুর দেখার কথা নয়। তবে আজ তাদের সুস্থ হয়ে ওঠার যাত্রার শুরু। মানবতা, সেবা ও দক্ষতা-ই আমাদের এনএইচএসের সর্বোচ্চ মূল্যবোধকেই প্রতিফলিত করে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার বলেন, শিশুরা যুদ্ধের নিরপরাধ শিকার। গাজায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, হাসপাতালগুলো অচল হয়ে গেছে। গুরুতর অসুস্থ অনেক শিশু বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছে না।

গাজার অসুস্থ শিশুদের প্রথম দলটি যুক্তরাজ্যে পৌঁছানো আমাদের মানবিক প্রতিশ্রুতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি সমর্থনকেই তুলে ধরে। আমরা গাজার চিকিৎসা অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা দাবি করতে থাকব, একই সঙ্গে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর প্রবেশ বাড়াতে চাপ দেব।

তিনি আরও যোগ করেন, এই অভিযানে সহযোগিতার জন্য আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জর্ডান সরকার, রয়্যাল জর্ডানিয়ান এয়ারলাইন্স এবং ব্রিটিশ জরুরি চিকিৎসা দল ও এনএইচএসের চিকিৎসক ও নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের নিবেদিত সেবাই এসব শিশুর জীবন রক্ষার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এসএএইচ