গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র আবারও ভেটো দিয়েছে, যা ছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই ইস্যুতে তাদের ষষ্ঠবারের মতো ভেটো। এই প্রস্তাব এমন এক সময় পেশ করা হয় যখন ইসরায়েল গাজা শহরে তাদের আগ্রাসন আরও জোরদার করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র একমাত্র দেশ হিসেবে ভেটো দেয়। প্রস্তাবটিতে গাজায় তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীর হাতে আটক সকল বন্দির মুক্তি এবং মানবিক সহায়তার ওপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছিল।
এই প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত ১০ সদস্য দেশের উদ্যোগে তৈরি করা হয় এবং আগের তুলনায় আরও দৃঢ়ভাবে গাজার ধ্বংসাত্মক মানবিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। প্রায় দুই বছরের যুদ্ধ শেষে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো প্রত্যাশিতই ছিল। দেশটির উপ-দূত মর্গান ওরটাগাস বলেন, এই প্রস্তাবে হামাসকে নিন্দা করা হয়নি কিংবা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এতে এমন কিছু মিথ্যা বর্ণনা বৈধতা পেয়েছে যা আসলে হামাসকে সুবিধা দেয় এবং দুঃখজনকভাবে এই পরিষদেও এমন ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, গাজায় সম্প্রতি জাতিসংঘ অনুমোদিত সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন যে দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দিয়েছে, তা ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতিতে করা হয়েছে এবং তিনি এমন খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রগুলোর প্রশংসা করেন—যেখানে বহু ফিলিস্তিনি খাদ্যের জন্য গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
ভোটের পর জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি নিরাপত্তা পরিষদকে তার নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে বাধা দিয়েছে—এই গণহত্যার মুখে নিরীহ বেসামরিকদের রক্ষা করার যে দায়িত্ব, তা থেকেও তারা পিছিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, এই নীরবতা পরিষদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও কর্তৃত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। স্পষ্টতই বলা যায়, যখন নৃশংসতা হয় তখন ভেটোর ব্যবহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমার বেনদাজমা আরও তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন,ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনেরা, আমাদের ক্ষমা করুন। আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা আজ ভেটোর দেয়ালে এসে ভেঙে পড়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
এমএসএম