জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জকসু) নির্বাচনকে আরও কার্যকর ও সময়োপযোগী করতে নয়টি নতুন সম্পাদকীয় পদ সংযোজনের প্রস্তাব দিয়েছে জবি শাখা ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর সংগঠনটির পক্ষ থেকে একটি লিখিত প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়। এতে জকসুর গঠনতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীসহ নতুন পদ অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হয়।
ছাত্রদলের দাবি, বর্তমান কাঠামোতে কিছু অসংগতি রয়েছে, যা জকসুর সুষ্ঠু পরিচালনার অন্তরায়। এসব বিবেচনায় তারা ৯টি নতুন পদ যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে। এগুলো হলো— স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক, দক্ষতা উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক, পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক।
এছাড়া ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ‘অর্থ সম্পাদক’ পদটি বাতিল করে শুধু ‘কোষাধ্যক্ষ’ পদ রাখার সুপারিশ করা হয়। তাদের মতে, দুটি পদ রাখলে তা পুনরাবৃত্তি ও সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব তৈরি করতে পারে।
এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়নেরও দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল। বিশেষ করে রাজনৈতিক কারণে যেসব শিক্ষার্থী অনার্স বা মাস্টার্স শেষ করতে পারেননি, তাদের জন্য রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ বৃদ্ধির নির্দেশনা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সংগঠনটির মতে, রেজিস্ট্রেশনের নিয়মিত মেয়াদ ৬ বছর হলেও বিশেষ প্রয়োজনে তা ৮ বছর পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আমলে পড়াশোনা শেষ করতে না পারা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মেয়াদ বৃদ্ধির স্পষ্ট নির্দেশনা দিতে হবে এবং পূর্ণাঙ্গ খসড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে প্রকাশ করতে হবে।
ছাত্রদল আরও প্রস্তাব করে, জকসু যেন প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৬৯ ও ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের মতো ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরার দায়িত্বও পালন করবে জকসু এমন কাঠামোর প্রতি সমর্থন জানায় সংগঠনটি।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘আমরা জকসু নিয়ে নতুন করে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছি। এর আগে জকসু নিয়ে আমরা বিভিন্ন পরামর্শও দিয়েছিলাম।’
জকসু নীতিমালা প্রণয়ন ও সংশোধন কমিটির সদস্য এবং শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘এটা কমিটির মিটিংয়ে উত্থাপন করলে কমিটি তা বিবেচনা করবে।’
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সর্দার, মোস্তফিজুর রহমান রুমি সহ অন্যান্য নেতাকর্মী।
টিএইচকিউ/এমএএইচ/এমএস