ন্যানো বানানা, গুগলের এআই চ্যাটবট জিমিনির নতুন টুল। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই চোখে পড়ছে ন্যানো বানানা দিয়ে তৈরি ছবি। একজনের দেখাদেখি অন্যজনও এসব ট্রেন্ডিং ছবি বানাচ্ছেন নিজের। তারপর ফেসবুক সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন। কিন্তু ন্যানো বানানা দিয়ে ছবি বানিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনছেন না তো?
এসব ট্রেন্ডে গা ভাসাতে গিয়ে নিজের গোপন তথ্য হাতছাড়া করছেন না তো? সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিগত তথ্য চলে যেতে পারে অন্যের হাতে। এমনকি ফাঁকা হতে পারে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পাসওয়ার্ড চলে যেতে পারে কোনো ডার্ক ওয়েবে।
গুগলের জিমিনির নতুন টুল ন্যানো বানানা। এই টুল দিয়ে তৈরি ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। এই টুলের মাধ্যমে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত চকচকে ত্রিমাত্রিক মডেল বানানো সম্ভব। যে কোনও দ্বিমাত্রিক ছবিকে এই টুল ত্রিমাত্রিক মডেলে বদলে ফেলতে পারে কয়েক মিনিটের মধ্যেই। সহজ প্রক্রিয়া, আকর্ষণীয় ছবির গুণগত মান, সৃজনশীলতা আর অ্যানিমেশনের কারণে এটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।
এটি অনেকের কাছে মজার হতে পারে, কিন্তু এটি কি নিরাপদ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে আপনার ছবিগুলোকে নতুন চেহারা দেওয়াটা খুব সাধারণ ব্যাপার মনে হতে পারে, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। এতে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা হাতছাড়া হতে পারে।
মানুষ দ্রুত এই এআই সিস্টেমে তাদের ব্যক্তিগত ছবি আপলোড করছে। এমন পরিস্থিতিতে, এআই সিস্টেমে আপলোড করা এই ছবিগুলোর কী হবে তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। অনেকেই বুঝতে পারছেন না এখানে বিপদের কি আছে, ধরুন আপনি আপনার ছবি এআইকে দিয়ে বললেন সেটি দিয়ে কোনো ট্রেন্ডিং ছবি বানিয়ে দিতে। কিছুক্ষণ সময় নিয়ে এআইআপনাকে মনের মতো ছবি দিলো। আপনি তা ডাউনলোড করে শেয়ার করলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কিন্তু আপনি যে ছবি এআইকে দিলেও সেটি কিন্তু এআইয়ের স্টোরে জমা হয়ে থাকে। ফলে অন্য কেউ যদি আপনার মতো বিবরণ কিংবা ধরুন বললো বাঙালি কোনো মেয়ের ছবি দাও, এআই কিন্তু তার স্টোরে থাকা ছবি থেকেই সেই ছবি বানিয়ে দেবে। অনেক খারাপ লোক এসব ছবি দিয়ে ডিফফেক ভিডিও বানায়, যা আপনার সম্মানহানির কারণ হতে পারে। তাই সাবধান হোন। বিশেষ করে নারীরা।
এআই দুনিয়ায় নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সবচেয়ে জরুরি। আপনি যে ছবি আপলোড করছেন, সে ছবি বা তথ্য কোথাও চলে যাবে কিনা বা বিক্রি হবে কি না, এ বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। যখন আপনি ছবি তোলেন, তার সঙ্গে ফোনের বিস্তারিত তথ্য থাকে। ঠিক তেমনি যখন আপনি ছবি আপলোড করেন, সেই ছবি ও তার ব্যাকগ্রাউন্ডের তথ্য চলে যায় প্ল্যাটফর্মগুলোতে।
তবে এসব তথ্য বা ছবি কোথায় জমা হচ্ছে তা এখনো অজানা। ফলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য অজান্তেই অন্য দেশের কোনো সার্ভারে চলে যেতে পারে। এই ধরনের ছবি ডিপফেক বা ফেক পর্নোগ্রাফি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হতে পারে এবং এমনকি ডার্ক ওয়েবেও বিক্রি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: মিডিয়াম
কেএসকে/জিকেএস