প্রায় তিন মাস ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে ভোলার লালমোহন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায়। এতে চরমভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন গ্রাহকরা। বাধ্য হয়ে অনেককে পুকুর ও খালের পানি দিয়ে রান্না করতে হচ্ছে। এদিকে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকলও প্রতি মাসেই বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছেন গ্রাহকদের। এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে গ্রাহকদের মাঝে। তাদের দাবি, বারবার জানালেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।
পৌরসভা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮-১৯৯৯ সালের দিকে ভোলার লালমোহন পৌরসভা এলাকায় পানি সরবরাহের লাইন চালু হয়। প্রায় ২২ কিলোমিটার এলাকায় লাইন টেনে গ্রাহকদের পানি সরবরাহ করা হয়। প্রথম শ্রেণির পৌরসভাটিতে বর্তমানে পানির গ্রাহক রয়েছেন ৭০০ জন।
আরও পড়ুন:পর্যটনে অপার সম্ভাবনায়ও উপেক্ষিত সাতক্ষীরাযাতায়াত দুর্ভোগে ৪০ শতাংশ পর্যটক কমেছে সিলেটে
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, লামোহন পৌরসভার ৭টি ভূগর্ভস্থ পানির পাম্প থাকলেও দীর্ঘদিন ধরেই পুরোপুরি বিকল রয়েছে ৪টি। তিনটি দিয়ে কোনোরকমে পানি সরবরাহ করা হলেও প্রায় তিনমাস ধরে সচল তিনটির মধ্যে একটি বিকল হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে পানির সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্নালী সড়ক, সবুজ বাগ, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ানী গ্রাম এবং ১ নম্বর ওযার্ডের অবদা রোড এলাকার প্রায় ২ শতাধিক গ্রাহক।
৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্নালী সড়কের গ্রাহক মো. সিরাজুল ইসলাম ও মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রায় তিন মাস ধরে তারা পৌরসভার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ লাইন থেকে পানি পাচ্ছেন না। অথচ প্রতি মাসেই তাদর বাড়িতে পানির বিলের কাগজ দিয়ে যাচ্ছে।
গৃহবধূ ইয়াসনুর বেগম ও পারুল আক্তার জানান, পৌরসভার পানি না পাওয়ার তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বাড়ির পাশের খাল ও পুকুরের পানি কলস ভরে নিয়ে এসে ঘরের রান্না-বান্নাসহ যাবতীয় কাজ করেন। বারবার কলস নিয়ে যাতায়াত নিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
আরও পড়ুন:
সেলুন-পার্লারের ভিড়ে দেখা মেলে না ভ্রাম্যমাণ নাপিতেরশিক্ষার্থীতে ঠাসা কিন্ডার গার্টেন, ফাঁকা সরকারি বিদ্যালয়
একই এলাকার আবুল কাশেম লোকমান ও মো. জাকীর হোসেন বলেন, প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় বসবাস করেও আজ তিন মাস ধরে পানি পাচ্ছি না। অথচ প্রতি মাসে মাসেই আমাদের পানির বিল ধরিয়ে দিচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে পানির বিল দিচ্ছি। বিল না দিলে লাইন কেটে দেবে। তখন পানির লাইন ঠিক হয়ে গেলে আবারও টাকা দিয়ে লাইন নিতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে বিল দিয়ে যাচ্ছি।
তারা আরও বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা কখনোই ভাবে না। ভাবলে তারা পানি ব্যবহার না করে কীভাবে পানির বিল ধরিয়ে দেয়।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ানী গ্রামের গ্রাহক মো. কামাল হোসেন ও মো. ফিরোজ জানান, তারা পানির সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক বার পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন। দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলেও সমস্যা কাটেনি। কবে সমাধান হবে তাও জানা নেই। তারা দ্রুত পানির লাইন ঠিক করার দাবি জানান।
লালমোহনের ইউএনও পৌরসভার প্রশাসক মো. শাহ আজিজ জানান, আপাতত বিকল একটি পাম্প মেরামতের কাজ করা হবে। এটি ঠিক হলে আবারও পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। পরবর্তীতে প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল ৪টি পাম্প নতুন করে বসানো হবে। পানি না পেয়েও বিলের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখবো।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এমএন/এমএস