পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের পরিবারের অর্থপাচার মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীর চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ড মঞ্জুরের কয়েক মিনিট পরই অসুস্থ হয়ে কাঠগড়ায় রাখা বেঞ্চে ঢলে পড়েন এনায়েত করিম চৌধুরী। পরে পুলিশ সদস্যদের কাঁধে ভর দিয়ে হাজতখানায় যান তিনি।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ সাব্বির ফয়েজের আদালত এনায়েত করিম চৌধুরীর রিমান্ড মঞ্জুরের এ আদেশ দেন। এ নিয়ে তৃতীয় দফায় তার রিমান্ড মঞ্জুর হলো।
জানা যায়, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ পুলিশের সাবেক আইজিপি (মহাপরিদর্শক) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মীর্জা, জ্যেষ্ঠ কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ও মেজ কন্যা তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ ১১ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করার অভিযোগ আনা হয়। মামলার অনুসন্ধান চলাকালে বেনজীরের অর্থপাচারের সঙ্গে আসামি এনায়েত করিম চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতা পায় দুদক।
আরও পড়ুন
মার্কিন নাগরিক এনায়েত তৃতীয় দফায় ৪ দিনের রিমান্ডে
এর আগে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের জন্য ভিনদেশি এজেন্ট হিসেবে কাজ করার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এনায়েত করিম চৌধুরী (৫৫) ও তার প্রধান সহযোগী গোলাম মোস্তফা আজাদের (৪৯) পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিএমএম আদালত। তার আগে ১৫ সেপ্টেম্বর একই মামলায় তার দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিন্টো রোড থেকে এনায়েতকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠান আদালত।
আসামির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রমনা থানায় হওয়া মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মিন্টো রোডের মন্ত্রিপাড়া এলাকায় প্রাডো গাড়িতে আরোহণ করে সন্দেহজনক চলাচল করতে দেখা যায় আসামি এনায়েত করিম চৌধুরীকে। এ সময় তার গাড়ি থামানো হয় এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কোনো সদুত্তোর দিতে না পারায় তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
তার কাছ থেকে পাওয়া ২টি আইফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তার ফোন বিশ্লেষণ করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নিজেকে ভিনদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে দাবি করেন। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের গোপন মিশন নিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে এদেশে এসেছেন বলে স্বীকার করেন।
এমআইএন/এএমএ/এমএস