এশিয়া কাপে তিনবার ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছিল। তিন ম্যাচেই টস এবং ম্যাচের পর পাকিস্তানিদের সঙ্গে করমর্দন করেননি ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও অন্য ক্রিকেটাররা। সর্বশেষ এশিয়া কাপ ফাইনালের পর পিসিবি (পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড) ও এসিসি (এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল) চেয়ারম্যান মাহসিন নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানান ভারতীয় ক্রিকেটাররা। এ নিয়ে তৈরি হয় চরম নাটকীয়তা। শেষ পর্যন্ত ভারতের ক্রিকেটাররা কল্পিত ট্রফি কল্পনা করে বিজয় উদযাপন করেন।
মূলত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক বিরোধই এশিয়া কাপে টেনে এনেছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটের মাঠেও পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের অগ্নি বাতাস বইয়ে দিয়েছেন সূর্যকুমার যাদবরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের জয় ছাপিয়ে গেছে রাজনৈতিক বিতর্ক। এই বিতর্কে যোগ দিলো ভারতের বিরোধী দলগুলোও। তারা ভারতীয় ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে ‘দ্বিচারিতা’র অভিযোগ এনে অধিনায়ক সূর্যকুমারকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছেন।
देखिए सीरीज़ की शुरुआत में, अभी 15 दिन पहले, पाकिस्तान के मंत्री मोहसिन नकवी के साथ हाथ भी मिलाया , फोटो भी खिंचवाया मगर भारत में मैच का विरोध हुआ तो खिलाड़ियों को नई स्क्रिप्ट दी ताकि देश में प्रोपेगंडा चला सकें https://t.co/2GmHAZFXqJ pic.twitter.com/xdUAYkJxKa
— Saurabh Bharadwaj (@Saurabh_MLAgk) September 29, 2025শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা ও সংসদ সদস্য সঞ্জয় রাউত ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে কটাক্ষ করে বলেন, তার আচরণে দ্বিচারিতা স্পষ্ট। রাউত একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যাদবকে পাকিস্তানের মন্ত্রী ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান মাহসিন নাকভির সঙ্গে করমর্দন ও ছবি তুলতে দেখা গেছে।
রাউতের অভিযোগ, ‘১৫ দিন আগে তিনি পাকিস্তানের মন্ত্রীর (মাহসিন নাকভি) সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, ছবি তুলেছেন। এখন দেশবাসীর সামনে দেশপ্রেমের নাটক দেখানো হচ্ছে। যদি সত্যিই দেশপ্রেম থাকত, তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামাই উচিত ছিল না।’
ফাইনালের আগের দিনও রাউত কড়া আপত্তি জানিয়েছিলেন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ আয়োজন নিয়ে। তার ভাষায়, ‘এটি কোনো বড় ম্যাচ নয়। এমন পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান খেলা খুবই দুঃখজনক। নাগরিকরা যখন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক চায় না, তখন কেন ক্রিকেট খেলা হবে? যখন অর্থই প্রাধান্য পায়, তখন জাতীয়তাবাদ হারিয়ে যায়।’
এদিকে, আম আদমি পার্টির (আপ) সিনিয়র নেতা সৌরভ ভরদ্বাজও একই ভিডিও শেয়ার করে ভারতের খেলোয়াড়দের ওপর ‘প্রচারণা চালানোর’ অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরুতে পাকিস্তানের মন্ত্রীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছবি তুললেন, আর দেশে ফিরেই তৈরি হলো নতুন নাটক। আসলে খেলোয়াড়দের একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগাও দাবি করেন, মাঠের বাইরে অন্তত দুবার তার সঙ্গে সূর্যকুমার করমর্দন করেছেন। ফাইনাল শেষে সংবাদ সম্মেলনে সালমান আগা জানান, সূর্য তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে করমর্দন করেছিলেন। কিন্তু যখনই ক্যামেরার সামনে এসেছিলেন, তখন আর হাত মেলাননি।
একবার নয়, দুবার ভারত অধিনায়ক তার সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন জানিয়ে সালমান বলেন, ‘প্রতিযোগিতার শুরুতে একবার সে আমার সঙ্গে একান্তে করমর্দন করেছিল।’ দ্বিতীয় ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরের ম্যাচ রেফারির সঙ্গে বৈঠকের সময় আমাদের দেখা হয়েছিল। তখনও হাত মিলিয়েছিল।’
এখানেই না থেমে সালমান বলেন, ‘কিন্তু যখনই ওরা ক্যামেরার সামনে চলে আসে, তখন আর আমাদের সঙ্গে হাত মেলায় না। আমি নিশ্চিত ওকে যা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোই মেনে চলছে। যদি এটা ওর একার ওপর নির্ভর করত, তা হলে নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে করমর্দন করত।’
রোববার ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে সালমান প্রথমে ভারতের সমালোচনা করে বলেন, ‘ভারত আমাদের সঙ্গে হাত মেলায়নি, মাহসিন নাকভির কাছ থেকে ট্রফি নেয়নি। ওরা আমাদের সঙ্গে যা করেছে, তাতে শুধু আমাদের অসম্মান করেনি, পুরো ক্রিকেটকে অসম্মান করেছে। এগুলো দেখে বাকি দলগুলো যদি এসব করতে শুরু করে? কোথায় শেষ হবে এসব? ক্রিকেটারদের তো রোল মডেল হওয়া উচিত। মাঠে এগুলো হতে দেখলে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কী শিখবে? এবার যা হয়েছে, খুব খারাপ।’
আইএইচএস/