ক্যাম্পাস

পাবিপ্রবিতে গবেষণায় যুক্ত শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে পাবেন ভাতা

 ৪-৫-১০ হাজার টাকা হারে এই ভাতা দেওয়া হবে  প্রতি প্রজেক্টে ৩ লাখ, গবেষণায় ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাবেন শিক্ষকরা  জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হলেও মিলবে সম্মানী  প্রতিবছর ভাইস চ্যান্সেলর রিসার্স অ্যাওয়ার্ড পাবেন একজন শিক্ষক

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরমধ্যে অন্যতম হলো গবেষণা সহকারী বা রিসার্স অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে কাজ করা শিক্ষার্থীরা পাবেন মাসিক ভাতা। স্নাতকে পড়া গবেষণা সহকারীরা প্রতিমাসে চার হাজার, স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা পাঁচ হাজার এবং পিএইচডি শিক্ষার্থীরা ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যান্ড টেকনোলজি ট্রান্সফার সেলের পরিচালক ড. লোকমান আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, শিক্ষকদের প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য তিন লাখ এবং পাঁচ লাখ টাকা গবেষণা বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রজেক্টে শিক্ষকদের বাধ্যতামূলকভাবে একজন ছাত্র/ছাত্রীকে গবেষণা সহকারী (রিসার্স অ্যাসিসট্যান্ট) নিতে হবে। ওই গবেষণা সহকারীর জন্য প্রতিমাসে ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই ভাতা শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে তাদের সুপারভাইজরের মাধ্যমে পাবেন। একজন শিক্ষক একটি প্রজেক্টের জন্য সর্বোচ্চ একজন গবেষণা সহকারী যুক্ত করতে পারবেন। এরআগে পুরো একটি প্রজেক্ট শেষ হলে একজন সুপারভাইজার গবেষণা সহকারীকে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দিতেন।

পরিচালক আরও জানান, শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো কোনো শিক্ষকের অধীনে কিউ-১ জার্নালে কোনো গবেষণাপত্র প্রকাশিত হলে, ওই শিক্ষকের অধীনে যেসব ছাত্র/ছাত্রী অথবা লেখক হিসেবে থাকবেন তাদের আপুপাতিক হারে ৫০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হবে। কিউ-২ জার্নালে প্রকাশ হলে ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণাপত্র প্রকাশ করতে যে খরচ লাগবে সেটা প্রশাসন থেকে দেওয়া হবে।

পিএইচডিতে অধ্যয়নরত কোনো শিক্ষার্থীর থিসিস রিলেটেড গবেষণাপত্র কিউ-১ জার্নালে প্রকাশিত হলে ৩০ হাজার টাকা, কিউ-২ জার্নালের জন্য ২০ হাজার এবং কিউ-৩ জার্নালে হলে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনডাক প্লেগ রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কার বাকৃবির গবেষকদলেরবাকৃবিতে গবেষণা প্রকল্পের উন্নত জাতের ১৪ ভেড়া চুরি

স্নাতকোত্তরের থিসেসের কোনো শিক্ষার্থীর গবেষণাপত্র যদি কনফারেন্সের জন্য নির্বাচিত হয়, তাহলে কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করার জন্য ওই শিক্ষার্থীকে তিন হাজার টাকা দেওয়া হবে। পিএচডির শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে পাঁচ হাজার টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর যে ইনোভেশন প্রজেক্টের আহ্বান করা হয়, সেই অর্থ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। শিক্ষকদের গবেষণায় উৎসাহিত করতে প্রতিবছর একজন শিক্ষককে ভাইস চ্যান্সেলর রিসার্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। এই অ্যাওয়ার্ডে ক্রেস্ট, সনদ এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

গবেষণার জন্য প্রশাসনের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান উল্যা আলিফ বলেন, ‘আগে শিক্ষার্থীরা গবেষণা করতেন কিন্তু নামমাত্র সম্মানী পেতেন। এখন মাসে মাসে টাকা পাবেন সবাই। এটা করাতে অনেকেই এখন গবেষণায় আগ্রহী হবেন।’

কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী রতন আহমেদ বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীকেই দেখেছি গবেষণায় আগ্রহ আছে কিন্তু টিউশনির জন্য সময় দিতে পারেছেন না। কারণ টাকা লাগবে। এখন যারা গবেষণা করবেন, তাদের অন্তত টাকার চিন্তা করতে হবে না। গবেষণা করে প্রতিমাসে যে টাকা পাবেন, সেটা দিয়ে একটা টিউশনির টাকা হয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আবদুল আওয়াল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণামুখী করতে হলে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করতে হবে। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে হবে। আমাদের গবেষণা বাজেট কম। গবেষণা বাজেট বাড়লে আমরা গবেষণা খাতে আরও বেশি সহযোগিতা করতে পারবো।’

এসআর/জিকেএস