আইন-আদালত

চাঁদাবাজির মামলায় এনসিপি নেতাসহ রিমান্ডে ৪

মব তৈরি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি হাসপাতালে চাঁদাবাজির সময় গ্রেফতার এনসিপির এক নেতাসহ চারজনকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এ আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী আব্দুর রহমান মানিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বি (২৮), হাবিবুর রহমান ফরহাদ, মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। অপর আসামি মো. শাহিন হোসেনকে (৩৮) প্রয়োজনবোধে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

এর আগে সোমবার তাদের কারাগারে পাঠিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন বিচারক।

ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, আজ পাঁচজনকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. নাজমুল ইসলাম আসামিদের সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত চার আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

চাঁদাবাজির ঘটনায় সেইফ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শিল্পী আক্তার গতকাল সোমবার মোহাম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় আসামি মো. শাহিন মোহাম্মদপুরের সেইফ হাসপাতালে এসে তার গর্ভবতী স্ত্রীর অবস্থা খারাপ জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডেলিভারির অনুরোধ করেন। কর্তৃপক্ষ তাকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি অনুরোধ করে বলেন, যেভাবে হোক আমার স্ত্রীর ডেলিভারির ব্যবস্থা করেন।

তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে সব কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে ডেলিভারির কাজ শুরু করেন। হাসপাতালে তার স্ত্রীর চিকিৎসা চলমান থাকা অবস্থায় নরমাল ডেলিভারিতে তিনি একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করেন। পরে বাচ্চা মারা যাওয়ার অভিযোগ এনে মামলা করবেন না মর্মে হাসপাতালের মালিকের ছেলে মো. আবু সাইদের কাছে গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা হাসপাতালের মেশিন ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।

একপর্যায়ে আসামিরা সাঈদকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেন। ভয়ে আসামিদের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন বাদী। আসামিরা চাঁদা নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রুত দেওয়ার জন্য বলেন। এরপর বিভিন্ন সময় আসামিরা মোবাইল ফোনে টাকা চান, অন্যথায় মামলার হুমকি দেন। গতকাল ২৮ সেপ্টেম্বর আসামিরা ১ লাখ টাকা চাঁদা নেন। বাকি টাকা দ্রুত দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করে।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে একজন প্রকাশককে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে তার বাসায় মব করে গত ২০ মে আটক হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ তিনজন। ওইদিন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।

এমআইএন/ইএ/জেআইএম