দেশজুড়ে

নিষেধাজ্ঞার শুরুতেই প্রণোদনার চাল চাইলেন বরগুনার জেলেরা

একের পর এক নিম্নচাপ এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর বরগুনার জেলেরা প্রায়শই খালি হাতে ঘাটে ফিরেছেন। এর মধ্যে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় জেলেদের হতাশা এখন দ্বিগুণ হয়েছে। এ কারণে নিষেধাজ্ঞার শুরুতেই সরকার ঘোষিত প্রণোদনার চাল পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে মৎস্য অধিদপ্তর দ্রুত চাল বিতরণের আশ্বাস দিয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষ্যে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলা এই সময়ে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এই ২২ দিনের জন্য জেলার ৪৮ হাজার নিবন্ধিত জেলের মধ্যে ৩৭ হাজার ৯৯৫ জনকে সরকারের পক্ষ থেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শুরু হলেও চাল না পাওয়ায় লক্ষাধিক জেলে এখন অভাব-অনটনে দিন কাটাবেন বলে জানিয়েছেন।

সরজমিনে বরগুনার বিভিন্ন জেলে পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, ঘাটে এসে জাল-দড়ি গোছাতে ব্যস্ত সমুদ্র থেকে ফিরে আসা জেলেরা। এরমধ্যে এক গ্রুপ প্রস্তুতি নিচ্ছে বাড়ি ফেরার। বয়সে বড়রা বসেছেন জাল মেরামত করতে। তবে এত কর্ম যজ্ঞের পর চাল না পেয়ে হতাশা আর খালি হাত নিয়েই বাড়ি ফিরছেন তারা। নিষিদ্ধকালীন সময়ে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা অনিশ্চিত। তাই এ সময়ে বরগুনার প্রায় লক্ষাধিক জেলে অভাব-অনটনে দিন কাটাবেন।

সাগর থেকে ফিরে আসা বরগুনা সদরের নলী এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রব জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর সাগরে আবহাওয়া খারাপ থাকায় ভালো মাছ পাওয়া যায়নি। এখন শুরু হবে ২২ দিনের অবরোধ। আমাদের প্রতি সপ্তাহে কিস্তি আছে। এই কয়দিন আমাদের দেনা করে এই কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। সরকার যদি আমাদেরকে সহজ শর্তে ঋণ দিত তবে আমরা পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে পারতাম।

তিন বছর ধরে চাল পান না বলে অভিযোগ করে জেলে রফিকুল জাগো নিউজকে বলেন, গত তিন বছর ধরে জেলে কার্ডে নাম থাকলেও আমাকে প্রণোদনার চাল দেওয়া হয় না। আমি আমার এলাকার মেম্বারদের অনেকবার বলেছি তাও তারা দেয়নি।

নিষিদ্ধকালীন সময়ে ভারতীয় জেলার এসে বাংলাদেশ মাছ ধরে নিয়ে যায় দাবি করে পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা জলিল মাঝি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা আইন মেনে তীরে ফিরে এলেও অনেকেই এই সময় অবৈধভাবে সাগরে যায়। আবার ভারতীয় জেলেরা এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়। পরে অবরোধ শেষে যখন আমরা সাগরে যাই তখন আর মাছ পাই না। সরকারের কাছে দাবি জানাই যেন এ বছর সাগরের ভারতীয় জেলেরা যাতে ঢুকতে না পারে সে ব্যবস্থা করে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসিন জাগো নিউজকে বলেন, প্রণোদনার চাল বরাদ্দ পেলেই এক সপ্তাহের মধ্যে সকল নিবন্ধিত জেলেদের দেওয়া হবে। এছাড়া ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ও নদ-নদী সমুদ্র মোহনায় কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী অভিযান পরিচালনা করবে। এবার বিমান বাহিনী আকাশ পথে নজরদারি করবে।

নুরুল আহাদ অনিক/কেএইচকে/এএসএম