দেশজুড়ে

জামায়াতের সভায় যুবদলের হামলা, আহত ৩

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় জামায়াতের নির্বাচন বিভাগের সভায় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হাবিবুর রহমান হবুলের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে জামায়াতের তিনজন আহন হন। হামলায় যুবদলের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী অংশ নেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার সান্দিকোনা বাজারে উপজেলা জামায়াতের সভায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা শহরে বিক্ষোভ করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সান্দিকোনা বাজারে উপজেলা জামায়াতের নেতাদের উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাচন বিভাগের সভা শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি হাবিবুর রহমান হবুর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন সশস্ত্র অবস্থায় সভায় হামলা করে। এতে ইউনিয়ন জামায়াতের সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম, জামায়াত কর্মী শাহীন মিয়া ও নয়ন মিয়া আহত হন। তাদের মধ্যে শামীমকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সাদেকুর রহমান বলেন, জামায়াতের নিয়মিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হঠাৎ যুবদলের নেতাকর্মীরা হামলা করে। এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। তারা হকিস্টিক, রড, বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাদের কর্মীদের বেধড়ক মারধর করে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমার রড-সিমেন্টের দোকানের পাশে একটি কোচিং সেন্টারে তারা মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে আমাদের দলের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছিল। পরে ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মী গিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এরপর দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হলে বাজারের মুরুব্বিরা থামিয়ে দেন। এতে আমিসহ যুবদলের আরও দুজন কর্মী আহত হন।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম হিলালি বলেন, জামায়াতের নির্বাচন কমিটির মিটিংয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলছিল। সেখানে আওয়ামী লীগের লোক তাদের সঙ্গে কেন, আমাদের লোকজন জিজ্ঞেস করে। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে মারামারি হয়।

এদিকে সভায় হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার দুপুরে উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তারা বিক্ষোভ থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন।

এর আগে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয় জামায়াত। জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক ছাদেক আহমাদ হারিছ ও সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর জুলুম নির্যাতনের পর এক স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে। এখন এই সময়ে এসে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না গিয়েই স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কেউ জামায়াতের জনপ্রিয়তা দাবিয়ে রাখতে পারবে না। এ দেশের মানুষ আর কোনো স্বৈরাচার চায় না। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দোষীদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ ঘটনা প্রমাণ করে এ দেশের মানুষ বিএনপির কাছে নিরাপদ নয়। আমরা বিএনপির নেতাদের সুষ্ঠু ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার আহ্বান জানাই। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচিত করুন। না হয় এর দায়ভার বিএনপিকেই নিতে হবে।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, থানায় অভিযোগ করেন জামায়াতের নেতারা। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এইচ এম কামাল/এমএন/জেআইএম