মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ক্লিবডন চা বাগানের শ্রমিক সর্দার রামবচন গোয়ালা হত্যার রহস্য উদঘাটনের কথা জানিয়েছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি গোলাপ সতনামীকে আলামতসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আজমল হোসেন।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত গোলাপ সতনামীর কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত লাঠি, ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোন, জুতা, গামছা ও তার মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রামবচন গোয়ালা বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে ব্যর্থ হলে ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। পরদিন সকালে জুড়ীর কাপনাপাহাড় চা-বাগান এলাকায় রক্তের দাগ ও স্যান্ডেল দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে বাবুনালা ছড়া থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর পুলিশের বিশেষ টিম তদন্ত শুরু করে। গোপন তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ভোরে জুড়ীর কামিনীগঞ্জ বাজার থেকে গোলাপ সতনামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সেদিন সন্ধ্যায় আসামি গোলাপ সতনামী রামবচনকে মদ খাওয়ার প্রস্তাব দেয় ও মোটরসাইকেলে রত্না চা বাগানে যায়। সেখানে চন্দন নামের এক ব্যক্তিসহ তারা মদ পান করে। এসময় চাকরি ফেরত চাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। রামবচন গোলাপকে গালিগালাজ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে সে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালে গোলাপও রামবচনের কারণে চাকরি হারিয়েছিল, তাই তার দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল। রাত আনুমানিক ১০টা ৪০ মিনিটে সাগরনাল চা বাগান থেকে ফেরার পথে বাবুনালা ছড়ার কাছে মোটরসাইকেল থামিয়ে গোলাপ কোদালের হাতল দিয়ে রামবচনের মাথায় একাধিক আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। হত্যার পর গোলাপ সোনারূপা চা বাগানে গিয়ে এক ব্যক্তিকে বিষয়টি জানায়। পরে দুজনে মিলে মরদেহ টেনে বাবুনালা ছড়ায় ফেলে দেয় এবং গাছপালা ও মাটি চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফরহাদ মিয়া।
ওমর ফারুক নাঈম/এমএন/জেআইএম