যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদহ জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের দাবিতে সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে ভবদহ মহাবিদ্যালয়ের মাঠে ‘ভবদহ আমডাঙ্গা সংস্কার আন্দোলন কমিটির’ ব্যানারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ভবদহ অঞ্চলের তিন সংসদীয় আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচনে জয়ী হলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর এবং যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রসুল। এসময় তিনি বলেন, ভবদহের দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা কেবল একটি ভৌগোলিক সমস্যা নয়, এটি মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে জড়িত। অতীতের সরকারগুলো ভবদহ নিয়ে শুধু প্রতিশ্রুতির রাজনীতি করেছে, কিন্তু বাস্তব কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ভবদহকে পুঁজি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে ভবদহবাসীর আর আন্দোলন করা লাগবে না। পরিকল্পিত ও স্থায়ী সমাধান করবো। এ সময় তিনি বিগত সরকারের সময় ভবদহ প্রকল্পের নামে লুটপাটকারীদের শাস্তির দাবি জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের দলটির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক বলেন, ভবদহবাসী ত্রাণ চায় না। তারা ভবদহের অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়। বিগত সরকারের নেতা-আমলারা সমস্যা সমাধানের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ভবদহকে নিরাপদ জনপদ গড়তে কাজ করবে।
কেশবপুরের সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মঞ্জুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশের আরও বক্তব্য রাখেন যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মুক্তার আলী, জেলা জামায়াতের ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আবু জাফর সিদ্দিকী, ভবদহ আন্দোলন কমিটির নেতা আবুল হাশিম রেজা, উপজেলা আমীর ফজলুর হক প্রমুখ।
ভবদহ অঞ্চলটি যশোর জেলার অভয়নগর, মণিরামপুর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদীর মাধ্যমে এই এলাকার পানি ওঠানামা করত। তবে গত চার দশকের বেশি সময় ধরে পলি জমে নদীগুলো নাব্যতা হারানোয় এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানেও ভবদহ এলাকার প্রতিটি বাড়িতে হাঁটুসমান পানি, ডুবে আছে ঘরবাড়ি, ফসলি মাঠ, ঘের, সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বছরের পর বছর ধরে লক্ষাধিক মানুষ এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
মিলন রহমান/কেএইচকে/এমএস