ক্যাম্পাস

দেশের প্রথম নারী গবেষক হিসেবে জাতিসংঘ ফেলোশিপে বাকৃবি শিক্ষার্থী

দেশের প্রথম নারী গবেষক হিসেবে জাতিসংঘের ইয়াং উইমেন ফর বায়োসিকিউরিটি ফেলোশিপ ২০২৫ প্রোগ্রামে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করা মারজানা আক্তার।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) মারজানা আক্তার নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বুধবার (১ অক্টোবর) তাকে ই-মেইলে ফেলোশিপের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। ১৯৩টি দেশের মধ্য থেকে মাত্র ১০ জন তরুণী গবেষক এই মর্যাদাপূর্ণ ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।

জানা যায়, বিশ্বব্যাপী বায়োলজিক্যাল উইপনস কনভেনশনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ফেলোশিপের আয়োজন করছে জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক দপ্তর। এর উদ্দেশ্য হলো, জীববিজ্ঞানের ব্যবহারকে মানবকল্যাণের পথে পরিচালিত করা এবং বায়োসিকিউরিটি বিষয়ে বৈশ্বিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

এ বছরের ফেলোশিপের সমাপনী অনুষ্ঠান হবে ডিসেম্বর মাসে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়, যেখানে বিশ্বের শীর্ষ গবেষক ও নীতিনির্ধারকরা অংশ নেবেন। বাংলাদেশ থেকে মারজানা আক্তার সেখানে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

মারজানা সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজিতে স্নাতকোত্তর (এমএসসি) সম্পন্ন করেছেন। এর আগে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) থেকে বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজিতে স্নাতক (বিএসসি) ডিগ্রি অর্জন করেন।

স্নাতকোত্তর গবেষণায় মারজানা দেশের পোলট্রিতে চিকেন ইনফেকশাস অ্যানিমিয়া ভাইরাস নিয়ে কাজ করে দেশের প্রথম জেনোটাইপ থ্রি-বি স্ট্রেইন শনাক্ত করেন, যা ভাইরোলজি গবেষণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। তার এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন।

মারজানা বলেন, আমার যাত্রাটা ছিল খুব কঠিন। কিন্তু আমি জানতাম, যদি আমি হাল না ছাড়ি তবে একদিন এ কষ্টই আমার শক্তি হয়ে দাঁড়াবে। আনাইজা আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণা।

নিজের অর্জন নিয়ে মারজানা আক্তার বলেন, জাতিসংঘের ফেলোশিপে নির্বাচিত হওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতিগুলোর একটি। আমি চাই, এই সাফল্য দেশের মেয়েদের জানাক, কোনো কষ্ট, অসুস্থতা কিংবা বাধা আমাদের স্বপ্নের পথে দাঁড়াতে পারে না। বিজ্ঞানকে মানবকল্যাণে ব্যবহার করাই এখন আমার জীবনের লক্ষ্য।

এ পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত জার্নালে মারজানার ৯টি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রবন্ধ মারজানার প্রকাশিত হয়েছে। তার গবেষণার বিষয় ভাইরোলজি, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) ও সংক্রামক রোগবিষয়ক।

আসিফ ইকবাল/এমএন/এএসএম